অতিরিক্ত টাকা না পেয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিতে না দেওয়ায় বিক্ষোভ

print news

রাকিবুল আওয়াল পাপুল, শেরপুর প্রতিনিধিঃ

শেরপুর ঝিনাইগাতীর দক্ষিণ ঘাঘরা ফজলুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী এতিম শামীমকে সরকার নির্ধারিত টাকার চেয়ে অতিরিক্ত এক হাজার টাকা না দেওয়ায় পরীক্ষায় অংশ নিতে দেয়নি প্রধান শিক্ষক। উল্টো তার জায়গায় জালিয়াতি করে শাওন নামের অন্য এক ছাত্রকে দিয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করিয়াছিলো ওই প্রধান শিক্ষক নুরুল হক।

শামীম, পিতা- মৃত আব্বাস আলী, মাতা- শিরিনা, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের রোল নম্বর ৪৩১৪৫৯ এর স্থলে ওই রোল নম্বর ব্যবহার করে প্রথম দিনের পরীক্ষা দেয় শাওন।

এ ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ৩ মে মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনার প্রতিবাদে উপজেলার কয়রোড চৌরাস্তা মোড়ে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করে স্থানীয় জনগণ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। পরে তারা মানব বন্ধনে দাড়িয়ে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তারা।

বিক্ষোভে হাতিবান্ধা ইউপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আকবর আলী, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন শেরপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মানিক মিয়া, সহ সভাপতি আমিনুল ইসলাম রাজু, সৃষ্টি হিউম্যান রাইটস সোসাইটির জেলা সভাপতি আলমগীর আল আমিন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আজকের তারণ্যের সভাপতি রবিউল ইসলাম রতন, বাংলাদেশ জাসদ শেরপুর জেলা শাখার সহ সভাপতি আবুল কালাম আযাদ, হাতিবান্ধা ৮ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মহসিন আলী, জুলগাঁও পুরাতন মসজিদের সদস্য রবিন মিয়া, শিক্ষার্থীর মা মামা বকুল মিয়া, আরিফ হোসেন ও মা শিরিনা বেগমসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীবৃন্দ, ঝিনাইগাতী থানা পুলিশ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, এবার এসএসসি পরীক্ষার ফিস, কেন্দ্র খরচ ব্যবহারিক পরীক্ষার ফিস ছিলো ২০২০ টাকা। কিন্তু ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল হক আদায় করে তিন হাজার টাকা করে। পিতৃহারা শামীম অনেক কষ্ট করে দুই হাজার টাকা প্রধান শিক্ষককে দিয়ে আসে । কিন্তু সে আরো এক হাজার টাকা দাবি করে। এ টাকা না দেওয়ায় তাকে পরীক্ষার প্রবেশ পত্র দেয়নি। উল্টো তার জায়গায় শাওন নামের একজনকে দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ায়। এঘটনার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি স্থানীয়দের।

এ বিষয়ে জানতে ঘাগড়া দক্ষিণপাড়া ফজলুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ে গেলে প্রধান শিক্ষক নুরুল হকে পাওয়া যায়নি। বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘শুনেছি প্রধান শিক্ষক অসুস্থ তাই স্কুলে আসেনি। আমি নিজেও বারবার ফোন দিয়েছি, কিন্তু ফোনে পায়নি।’

শামীমের ব্যাপারে জানতে চাইলে শিক্ষক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘শামীম ফরম ফিলাবের সময় প্রধান শিক্ষককে দুই হাজার টাকা দিয়েছিলো। দুই হাজার ছাড়াও অতিরিক্ত কিছু টাকা চাইলে শামীম দিতে পারেনি। পরে শুনলাম এডমিটের জন্য ছেলেটা পরিক্ষা দিতে পারেনি।’

তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন শেরপুরের জেলা শিক্ষা অফিসার মো: রেজুয়ান। তিনি জানান, এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: ফারুক আল মাসুদ জানান, আমরা এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে, দোষী প্রমানিত হলে বিভাগীয় শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *