রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একটি ভোটকেন্দ্রের সামনের সড়কে দুই ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। বুধবার দুপুরে নগরীর ভেড়িপাড়ার মোড়ে কেশবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে পাঁচ মিনিটের জন্য রণক্ষেত্রের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এতে দুই প্রার্থীরই নির্বাচনী ক্যাম্পের চেয়ার ভাঙচুর করা হয়।
কিছুক্ষণের মধ্যেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর প্রায় এক ঘণ্টা পর্যন্ত এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করে। ভোটাররা ভয়ে কেন্দ্র থেকে চলে যান।
সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া দুই কাউন্সিলর প্রার্থী হচ্ছেন রুহুল আমিন যিনি বর্তমান কাউন্সিলর ও এবারের নির্বাচনেও কাউন্সিলর প্রার্থী। তিনি ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন। তবে কোনো পদে নেই। তার প্রতিপক্ষ ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম বাবু।
সংঘর্ষের পর পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার দুপুর ১২ টার দিকে আশরাফুল ইসলামের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করার অভিযোগে তার সমর্থকরা নগরীর ভেড়িপাড়ার মোড়ে অবস্থানরত রুহুল আমিনের সমর্থকদের ধাওয়া করেন। পাশেই একটা খড়ির দোকান থেকে কাঠ নিয়ে তারা এই হামলা চালান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
কেশবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের দক্ষিণ পাশে রুহুল আমিনের একটি নির্বাচনী কেন্দ্র ছিল। আশরাফুল ইসলামের সমর্থকরা সেই কেন্দ্রের প্লাস্টিকের চেয়ারগুলো ভাঙচুর করেন। অপরদিকে রাজশাহী পিটিআই কেন্দ্রের পাশে অবস্থিত আশরাফুল ইসলামের নির্বাচনী কেন্দ্রে কয়েকটি চেয়ার ভাঙচুর করা হয়।
কেশবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার বিবেকানন্দ বিশ্বাস জানান, সংঘর্ষ হয়েছে কেন্দ্রের বাইরের রাস্তায়। এতে কেন্দ্রে কোনো প্রভাব পড়েনি। এক মিনিটের জন্য ভোট বন্ধ হয়নি।
তবে বেলা সাড়ে বারোটার দিকে ওই কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটকেন্দ্রে ভোট দেওয়ার জন্য কোনো ভোটার নেই। এ সময় একজন নারী ভোট দিতে এসেছিলেন।
এ ব্যাপারে বর্তমান কাউন্সিলর রুহুল আমিন বলেন, তার প্রতিপক্ষ প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম হেরে যাবেন বুঝতে পেরে চার-পাঁচশ লোক নিয়ে তার সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এই সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে তার স্ত্রী আহত হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।
আশরাফুল ইসলাম বাবুকে কল করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তার ভাই মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রুহুল আমিন টুনুর লোকজন আমাদের ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দিচ্ছিলেন। এর প্রতিবাদ করলে তারা আমাদের দুটি নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করেছে। পদ্মার বাঁধের ধারে আমাদের সমর্থকদের বাড়িতেও হামলা হয়েছে। একটি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়েছে। হামলায় আমাদের পাঁচজন আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’