বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ সোমবার সারা দেশে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ পালন করা হবে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘শিশুর জন্য বিনিয়োগ করি, ভবিষ্যতের বিশ্ব গড়ি’।
বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, অধিকার ও সুরক্ষা বিষয়ে পৃথক পৃথক বাণী প্রদান করেছেন।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিবছর অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার বিশ্ব শিশু দিবস পালন করে থাকে। একই সাথে শিশুর অধিকার, সুরক্ষা এবং শিশুর উন্নয়ন ও বিকাশে সংশ্লিষ্ট সকলকে অধিকতর উদ্যোগী ও সচেতন করার লক্ষ্যে ২ থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত পালন করা হবে শিশু অধিকার সপ্তাহ।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দিবসটি উপলক্ষে এক বাণীতে বলেন, বিশ্বকে সুন্দর করার পূর্বশর্ত শিশুদের সুন্দর করে গড়ে তোলা। শিশুরাই জাতি গঠনের মূল ভিত্তি, সুন্দর আগামী প্রতিষ্ঠার কারিগর। তাই বিশ্বকে সুন্দর করার পূর্বশর্ত শিশুদের সুন্দর করে গড়ে তোলা।
তিনি বলেন, শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের জন্য পুষ্টি, শিক্ষা, নিরাপত্তা ও সুস্থ বিনোদনের বিকল্প নেই। সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও সঠিক দিক নির্দেশনার মাধ্যমেই শিশুদের পরিপূর্ণ বিকাশ সম্ভব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, শিশুদের মনে বড় হওয়ার স্বপ্ন ও সাহস জাগিয়ে দিতে সরকার সব সময় বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্যে শিশুদের পরপূর্ণ বিকাশ,স্বাস্থ্য সুরক্ষা, সুশিক্ষা ও সুস্থ বিনোদন নিশ্চিত করার জন্য আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, শিশুদের যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সরকার শিশুদের আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য তথ্য-প্রযুক্তিজ্ঞানে সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলার উপযোগী সবরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ উদযাপন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা আগামীকাল সকাল ১০টায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, ইউনিসেফ, দেশি ও বিদেশি শিশু সংগঠন ও উন্নয়ন সংস্থার আয়োজনে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। শিশুদের কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, দেয়ালিকা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশু সংলাপ, ক্রীড়া, বৃক্ষরোপন কর্মসূচি ও গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরাম আয়োজন করছে আলোচনা ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আমার কথা শোনো, ছোটরা বলবে বড়রা শুনবেন বিষয় ভিত্তিক আলোচনা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্যাম্পেইন এবং জাতীয় পর্যায়ে পলিসি ডায়ালগ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও বিভিন্ন শিশু সংগঠনের রয়েছে শিশুদের শিক্ষা, বিকাশ, অধিকার ও সুরক্ষা বিষয়ে পৃথক পৃথক কর্মসূচি।
বিশ্ব শিশু দিবসের অনুষ্ঠান ও টকশো বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশে বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত হবে। বিশেষ ক্রোড়পত্র ও স্মরণিকা প্রকাশ এবং আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হবে। এছাড়া পোস্টার, পিভিসি ও ফেস্টুন-ব্যানার স্থাপনের মাধ্যমে বিভিন্ন ভবন ও ঢাকার প্রধান প্রধান সড়কদ্বীপ সজ্জিত করা হবে। দেশের সকল জেলা এবং উপজেলায় বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ উদযাপন করা হবে।
বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ উদযাপনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাথে সহযোগী হিসেবে থাকবে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমুহ। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় উন্নয়ন সংস্থার মধ্যে রয়েছে ইউনিসেফ, শিশু অধিকার ফোরাম জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরাম, সিনারগোসবাংলাদেশ,এস ও এস চিলড্রেন ভিলেজ, সেভ দ্য চিলড্রেন, এডুকো, অপারাজেয় বাংলাদেশ, জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামসহ বিভিন্ন শিশু সংগঠন ও সংস্থা।