সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার পথে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রীবহন করে এমভি বার আউলিয়া ও এলসিটি কাজল নামে দুটি জাহাজ। ফলে সিটে বসা নিয়ে যাত্রীদের মাঝে দফায় দফায় মারামারি ঘটনা ঘটেছে।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ৩টার দিকে সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফের উদ্দেশ্যে রওনার পর জাহাজের ভেতর এ ঘটনা ঘটে।
এমভি বার আউলিয়ার যাত্রী জাহাঙ্গীর আলম জানান, জাহাজে ১২০০ জন ধারণ ক্ষমতা থাকলেও এতে তোলা হয় দুহাজারের অধিক যাত্রী। ফলে শত শত নারী-পুরুষ ও শিশু বসার জায়গা না পেয়ে ফ্লোর ও চলাচলের সিঁড়িতে, জাহাজের বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্র দাঁড়িয়ে ছিলেন। যে যেখানে বসতে পেরেছে সেখানে বসে পড়ে। জাহাজের কোন অংশই খালি ছিলনা। অনেকে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলেন না। কিন্তু তাদের আর কোনো উপায়ও ছিল না। যাত্রীরা কাউন্টার থেকে নির্দিষ্ট সিটের টিকিট কেনার পরও জাহাজে গিয়ে বসতে পারেনি। তাদের কেনা সিটে অন্য যাত্রী বসে আসেন।
অপরযাত্রী আরিফুল ইসলাম জানান, জাহাজে ওঠার পর বসার ব্যবস্থা করতে অনেকে টাকা দিয়ে প্লাস্টিকের চেয়ার আনিয়েছেন। এজন্য ২০০-৩০০ টাকা নিয়েছেন জাহাজের কর্মীরা। জাহাজের একটি সিট দুজনের মাঝে বিক্রি হওয়ায় বসা নিয়ে জাহাজের যাত্রীদের দফায় দফায় মারামারির ঘটনা ঘটে। পর্যটকরা দাঁড়িয়ে ছবি তুলবে বা হাটাহাটি করবে সে সুযোগও পায়নি।
যাত্রী মুমিন সাহরিয়ার বলেন, শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) এমভী বার আউলিয়া জাহাজে সেন্টমার্টিন যাই। রোববারে টেকনাফে ফেরার জন্য বিজনেস ক্লাসের তিনটি টিকিট কিনি। কিন্তু জাহাজে উঠে দেখি আমার সিটে অন্যরা বসা। সিটগুলো আমাদের কেনা বলার পর তারা জানায়, সিটগুলো তারাও কেটেছে। এনিয়ে ওই যাত্রীরা আমাদের উপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে ৪-৫ জন একত্রে আমাকে প্রহার করে। এসময় জাহাজ কর্তৃপক্ষের কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারী এগিয়ে আসেননি। এভাবে হয়রানির শিকার হলে পর্যটকরা পরবর্তীতে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাওয়া বন্ধ করে দিবেন।
এল সি টি কাজলের যাত্রী হামিদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, জাহাজ কর্তৃপক্ষ আমার কাছ থেকে টিকিটের টাকা নেওয়ার পরও সিটে বসতে দেয়নি। এ নিয়ে অভিযোগ করার পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। একই সিটের ডাবল যাত্রী হওয়ায় আমাদের মাঝে বাকবিতণ্ডা হয়। জাহাজের কর্মীরা জাহাজের ভেতর প্লাস্টিকের চেয়ারগুলো বসার জন্য বিক্রি করেছে।ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়াতে আমরা এমন নাজেহাল পরিস্থির মধ্যে পড়েছি। জাহাজের কোন অংশ খালি ছিলনা। প্রায় আড়াইঘন্টা সময় জাহাজে যে কষ্ট সহ্য করতে হলো তা বলার মতো নয়।
এমভি বার আউলিয়ার পরিচালক মাহবুবুর রহমান বলেন, কর্ণফুলি জাহাজটি যান্ত্রিক সম্যসায় পড়ায় সেন্টমার্টিন যেতে পারেনি। তাই দ্বীপে থাকা পর্যটকদের বার আউলিয়া জাহাজে করে নিয়ে আসা হয়। তবে সিটে বসা নিয়ে ঝগড়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) ইয়ামিন হোসেন বলেন, প্রশাসনের কাছে এখনো খবর আসেনি। অন্য জাহাজের যাত্রী নিয়ে আসলে কর্তৃপক্ষেরই তা সমন্বয় করার কথা। আর অতিরিক্ত যাত্রী বহন মোটেও উচিত নয়। খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।