মোঃ ইব্রাহিম খলিল:
চট্টগ্রামে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারদলীয় সংগঠনের কর্মীদের সংঘর্ষের মধ্যে তিনজনের লাশ নেওয়া হয়েছে হাসপাতালে।
মঙ্গলবার বিকালে নগরীর মুরাদপুর থেকে ষোলশহর পর্যন্ত এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষের মধ্যে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনজনের লাশ গেছে। তাদের মধ্যে দুজন শিক্ষার্থী, অন্যজন পথচারী। তাদের দুজনকে মুরাদপুর ও ষোলশহর এলাকা থেকে আনা হয়েছে। নিহত পথচারীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।”
নিহত দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে ওয়াসিম আকরাম চট্টগ্রাম কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতন তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তার বাড়ি কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায়।
আকরাম চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বলে দাবি করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির দপ্তর সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ইদ্রিস আলী।
নিহত পথচারীর নাম ফারুক, বয়স ৩২ বছর। তিনি রট আয়রনের মিস্ত্রি বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
নিহত তৃতীয় ব্যক্তি ফয়সাল আহমদ শান্ত (২০), ওমরগণি এমইএস কলেজের ছাত্র বলে জানিয়েছেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিকাল ৪টা থেকে সাড়ে ৪টার মধ্যে এই তিনজনের মৃতদেহ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তাদের মৃত্যু হয়েছিল।
“তাদের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে বুলেট ইনজুরিতে। আরেকজনের শরীরে ফিজিকাল অ্যাসল্টের চিহ্ন ছিল।”
সংঘর্ষের মধ্যে অন্তত ৪০ জনকে আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে বলে মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আলাউদ্দিন তালুকদার জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা এদিন দুপুরে ষোলশহর রেল স্টেশনে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেন। সেখানে আগে থেকে অবস্থান নিয়ে ছিলেন সরকারদলীয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।আন্দোলনকারীরা ষোলশহর রেল স্টেশন এলাকায় অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করলে মুরাদপুর মোড়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের ওপর হামলা হয়। পরে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়েন।
পরে দুই পক্ষের মধ্যে ঢিল ছোড়াছুড়ি শুরু হলে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় সড়কে বিস্ফোরণের শব্দও শোনা যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।