সিবি টুয়েন্টিফোর ডেস্ক:
মৃত্যুর ১৬ ঘণ্টা আগে ওয়াসিম আকরামের তার ফেইসবুকে পোস্ট করেন- ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে আমার প্রাণের সংগঠন। আমি এ পরিচয়ে শহীদ হবো’। ঠিকই সে আন্দোলনে মৃত্যু হলো তার। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বেলা ৩টার দিকে চট্টগ্রামে মুরাদপুর এলাকায় আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে নিহত হন ওয়াসিম আকরাম।
সারা দেশে চলমান কোটা সংস্কারের দাবিতে চট্টগ্রামে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে মেধাবী শিক্ষার্থী ওয়াসিম আকরাম ছাড়া আরও দুজন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে পথচারী ফারুকের পরিচয় পাওয়া গেলেও বাকি একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
নিহত ওয়াসিম আকরাম কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা সদর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ মেহেরনামা বাজার পাড়া এলাকার প্রবাসী শফিউল আলম ও জোৎসনা আক্তারের পুত্র। সে চট্টগ্রাম কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বেলা ৩টা থেকে নগরের মুরাদপুর ২ নম্বর গেট এবং ষোলশহর আশপাশের এলাকায় কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এর আগে দুপুর থেকে বিভিন্ন মোড়ে অবস্থা নেন ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা। দুই নম্বর গেটের এলাকায় একটি বাস ভাঙচুর করেন তারা। সংঘর্ষের শুরুতে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করলেও পরে গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ শুরু হয়। কয়েকজন অস্ত্রধারীকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন। পরে তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এভাবে চলতে থাকে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া।
আতংকিত হয়ে সাধারণ মানুষ এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। শিক্ষার্থীদের কয়েকটি অংশ অলিগলিতে ঢুকে পড়লে সেখান থেকেও খুঁজে বের করে হামলা করা হয়েছে তাদের।
নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে তার পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। রাতে নিহতের বাড়িতে গেলে দেখা যায় মায়ের আহাজারিতে পুরো পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে।
এদিকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মেধাবী শিক্ষার্থী ওয়াসিম আকরামের মৃত্যুর ঘটনার বিচার দাবিতে পেকুয়া চৌমুহনীতে ছাত্রদল নেতা মারুফ, এরশাদ, সাঈদীর নেতৃত্ব পৃথক পৃথক দুটি বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে পেকুয়া থানা পুলিশ উপস্থিত হলে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ করে চলে যায়।
পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, কোটা আন্দোলন ইস্যুতে শান্ত পেকুয়াকে কোনো অবস্থায় অশান্ত করতে দেওয়া হবে না।