গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা। মাতারবাড়ির পশ্চিম তিতা মাঝির পাড়ার আকাশে তখনও ধোঁয়ার কুণ্ডলী। সামনের ভাঙা-জ্বলেপোড়া ঘরের পাশে দাঁড়িয়ে চোখে জল নিয়ে দেখছে ৬ষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া- ছাত্রী জাহিদা আর তার দুই ছোট বোন।
১২ বছরের জাহিদা চোখের জলে বলেন, “আমার সব বই পুড়ে গেছে, স্যার। স্কুলে যাবো কিভাবে?” অদূরে দাড়িয়ে মা বিধবা ঝিনুকা আকতার, তিনিও নির্বাক। দুবছর আগে স্বামীকে হারানো এই মায়ের মুখে সান্ত্বনার কোনো ভাষা নেই।
তিনিও বিলাপ করে বলছিলেন, “সবকিছু শেষ হয়ে গেল। কিছুই বাঁচাতে পারলাম না। তিন মেয়ে নিয়ে এখন কোথায় দাঁড়াবো?” ঝিনুকা সামান্য সেলাইয়ের কাজ করে কষ্টে তিন মেয়েকে নিয়ে দিন কাটাতেন। ঘর হারানোর শোক যেন জীবনের প্রতিটি স্বপ্নকেই ছাই করে দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, রাত ৮টার দিকে আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই বিধবা ঝিনুকের ছোট্ট ঘরটি দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। নিমিষেই ঘরটি ধ্বংস হয়ে যায়। শীতে মা-মেয়েরা এখন আশ্রয়হীন। জনপ্রতিনিধি এবং বিত্তবানদের এই পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর।
জন্য আকুল আবেদন জানিয়েছে এলাকাবাসী। প্রত্যক্ষদর্শীরা মনে করেন, প্রতিপক্ষ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে ঘরে আগুন লাগিয়েছে। কারণ আশেপাশের অন্য কোনো ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আবু হায়দার বলেন, ” তিন সন্তান নিয়ে তিনি এখন পুরোপুরি অসহায়। তার পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। বিত্তবানদের এই পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করছি।”
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীকি মারমা জানান, “এই অসহায় পরিবারটিকে সহযোগিতা করার জন্য চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে আবেদন দিতে। যথাসম্ভব সহায়তা দেওয়া হবে।”