নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ভিন্নমতাবলম্বী ও বিরোধীসহ সবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার সমুন্নত ও সুরক্ষিত রাখার জোরালো আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল এই আহ্বান জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের রাজনৈতিক সমাবেশ করতে বাধা দেয়া এবং ১৮৪ বাংলাদেশি সাংবাদিকের গুরুত্বপূর্ণ অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করার প্রসঙ্গে এমন মন্তব্য করেছে ওয়াশিংটন।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক বেদান্ত প্যাটেলকে প্রশ্ন করেন, ‘গত রোববার (১০ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকায় আওয়ামী লীগের কর্মীদের রাজনৈতিক সমাবেশ করতে বাধা দেয়ার মতো সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে দেখছে? ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কী বার্তা আছে? আর তার সমর্থকরা এর আগে বাক ও সমাবেশের স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলেছেন।’
এই প্রশ্নের জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘আমরা ভিন্নমতের ও বিরোধীদেরসহ সবারই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারে সমর্থন করি। আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে এসব স্বাধীনতা যেকোনও গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য উপাদান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারসহ আমাদের সব অংশীদারদের এই সমর্থনের কথা জানাই। এবং দেশের সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে বাংলাদেশের সব নাগরিকের জন্য এসব স্বাধীনতা সমুন্নত ও সুরক্ষিত রাখা জরুরি।’’
এছাড়া ব্রিফিংয়ের দ্বিতীয় প্রশ্নে সম্প্রতি বাংলাদেশে ১৮৪ সাংবাদিকের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিলের বিষয়েও বেদান্ত প্যাটেলের প্রতিক্রিয়া জানতে যাওয়া হয়। এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) ব্যুরোপ্রধান-সহ ১৮৪ বাংলাদেশি সাংবাদিকের গুরুত্বপূর্ণ অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে সাংবাদিকদের নিরাপত্তার অধিকারকে সমর্থন এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর বিধি-নিষেধ মোকাবিলা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কোন পদক্ষেপ রয়েছে কী? কেবল একটি তথ্য জানাচ্ছি যে, সম্প্রতি সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা সংগঠন কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) ইতোমধ্যে ড. ইউনূসকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র বলেন, আমি সেই প্রতিবেদনটি দেখিনি। যদি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই এটি দুর্ভাগ্যজনক। আমাদের দৃঢ় ও জোরালো দৃষ্টিভঙ্গি হলো, বাংলাদেশের পরিস্থিতি-সহ যেকোনও পরিস্থিতি তুলে ধরার জন্য জনসম্পৃক্ত এবং মুক্ত গণমাধ্যম অত্যাবশ্যক।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে মুক্ত সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা উৎসাহিত করার পাশাপাশি নিশ্চিত করতে চাই যে, (সেখানে নতুন পরিস্থিতিতে) সাংবাদিকদের অধিকার ও স্বাধীনতাকে যথাযথভাবে সম্মান করা হচ্ছে।