হাত বদলে বাড়ছে আলুর দাম, বিপাকে ভোক্তা

Screenshot 1
print news

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পৃথক ৩টি হিমাগারে পর্যাপ্ত মজুত থাকার পরও চড়ামূল্যে আলু বিক্রি হচ্ছে। ফলে হিমাগার থেকে বের করা মাত্র পরপর তিনবার হাত বদল হয়ে বাড়ছে আলুর দাম। সিন্ডিকেটের কারসাজিতে উৎপাদন পর্যায়ে ৩০-৩৫ টাকার আলু হাত বদলে ভোক্তাদের ব্যাগে উঠছে ৬৫-৭৫ টাকা কেজি দরে।
অন্যদিকে আলুর দাম বৃদ্ধির জন্য খুচরা বিক্রেতারা দায়ী করছেন পাইকারদের। তবে পাইকাররা দুষছেন হিমাগার সিন্ডিকেটকে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ হাতবদল হলেই বাড়ছে আলুর দাম। বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে সিন্ডিকেট। এ অবস্থায় আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং জোরদার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভোক্তারা।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, হিমাদ্রী কোল্ডস্টোরেজ, গোবিন্দগঞ্জ কোল্ডস্টোরেজ লিমিটেড-১ ও গোবিন্দগঞ্জ কোল্ডস্টোরেজ লিমিটেড-২ নামে পৃথক ৩টি কোল্ডস্টোরেজ রয়েছে। এর মধ্যে হিমাদ্রী কোল্ডস্টোরেজের ধারণক্ষমতা ৮ হাজার টন এবং অন্য দুটির ধারণক্ষমতা ২০ হাজার টন। সেই হিসাবে হিমাগার ৩টিতে আলু মজুত করা হয় ২৮ হাজার টন। এর মধ্যে প্রায় ৪ হাজার টন বীজ আলু দেখিয়ে অসাধু সিন্ডিকেটের কারসাজি চলছে। এর অংশ হিসেবে হিমাগারগুলো থেকে নিয়ন্ত্রিতভাবে বের করা হচ্ছে আলু। কৃষকের কাছ থেকে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে কেনা ও হিমাগারে সংরক্ষণে মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীদের কেজিপ্রতি খরচ পড়ে প্রায় ৪০ টাকা। তারা কেজিপ্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা বেশি মুনাফা নিয়ে হিমাগার গেটেই বিক্রি করছেন ৪৮ থেকে ৫০ টাকা করে। এর মধ্যে ৫ থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি করে পাইকারি ব্যবসায়ীরা কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে। আবার খুচরা বিক্রেতারা ১২ থেকে ১৫ টাকা মূল্য বাড়িয়ে বাজারে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করছেন ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়।
ভোক্তারা জানান, গত সপ্তাহে পৌর বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। চলতি সপ্তাহে আলুর দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে যাচ্ছে আলুর দাম। এই দাম বৃদ্ধিতে সিন্ডিকেটের কারসাজি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা। তা না হলে আলুর দাম এত বৃদ্ধি পাওয়ার কথা নয়।
পৌর খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, জাতভেদে আলুর দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি কাটিনাল আলু ৬৫, পাকড়ি আলু ৭০, সূর্যমুখী আলু ৭৫ এবং দেশি আলু ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গোবিন্দগঞ্জ কোল্ডস্টোরেজ লিমিটেড-১-এর ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক জানান, এ হিমাগারে গোবিন্দগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার কৃষকের আলু রাখা আছে। এরই মধ্যে ধারণক্ষমতার অর্ধেক আলু নিয়ে গেছেন তারা। এখানে আলু ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে হিমাগারের কেউ জড়িত নয় বলে দাবি করেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, গত বছর পৌর এলাকাসহ ১৭টি ইউনিয়নে ৫ হাজার ৬৮৪ হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদন হয়েছে ৬ হাজার ১০৪ টন। আলুর উৎপাদন ভালো হওয়ায় এবার ৬ হাজার ১০৪ হেক্টর জমিতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *