
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ ইয়ামিন হোসেনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও ছাত্র আন্দোলন দমনসহ নানা অভিযোগ তুলে শাস্তিমূলক বদলির দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন উদ্দিনের মাধ্যমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন আন্দোলনকারীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের পক্ষ থেকে দেওয়া স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২৩ সালের ৫ জুলাই প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ইয়ামিন হোসেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পান। এর পর থেকে তিনি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) পদে দায়িত্ব পালন করেন। জেলা প্রশাসক শাহীন ইমরান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হলেও, জেলার প্রশাসনিক ক্ষমতার মূল নিয়ন্ত্রণ ছিল এডিএম ইয়ামিনের হাতে।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ঝালমুড়ি বিক্রেতাদের কাছ থেকে বীচ কর্মীদের মাধ্যমে চাঁদা আদায় এবং ছাত্র আন্দোলন দমনে ম্যাজিস্ট্রেটদের লেলিয়ে দেওয়ার মতো একাধিক অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। জাতীয় পত্রিকায় এসব অভিযোগ প্রকাশ পেলেও তিনি ক্ষমতার জোরে দায়িত্বে বহাল ছিলেন।
ছাত্রআন্দোলনের সমন্বয়করা স্মারকলিপিতে অভিযোগ করেন, সরকারবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নির্মম দমন-পীড়নের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটদের মাঠে নামানো হয়। আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর গুলি, গ্রেফতার, নির্যাতন এবং ছাত্রীদের হেনস্তা করার অভিযোগও রয়েছে। নিশিরাতে ভোট ডাকাতি বৈধ করার জন্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সরাসরি ভূমিকা পালন করেছেন।
ছাত্রআন্দোলনের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে, এডিএম ইয়ামিনকে দ্রুত শাস্তিমূলক বদলি করতে হবে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর সহায়তায় যারা ছাত্র আন্দোলন দমন করেছে, তাদেরও আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি দিতে হবে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন উদ্দিন বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের ব্যানারে একটি স্মারকলিপি পেয়েছি। এতে ৫ আগস্টের পূর্ববর্তী ঘটনা এবং কর্মকর্তাদের ভূমিকার বিষয়ে অভিযোগ আনা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
অন্যদিকে অভিযোগ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ ইয়ামিন হোসেন বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের স্মারকলিপির বিষয়ে এখনো কিছু জানতে পারিনি। অভিযোগ হাতে না পেলে এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দেওয়া সম্ভব নয়।”
ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, অবিলম্বে প্রশাসনে শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।