
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে নথিভুক্ত দমন-পীড়ন ও গণহত্যার অভিযোগ থাকার পরও দলটিকে নিয়ে জনপ্রিয়তা জরিপ চালানো কতটা নৈতিক ও ন্যায়সঙ্গত– এমন প্রশ্ন তুলেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জরিপটির উদ্দেশ্য ও প্রভাব নিয়ে সমালোচনা করেন।
পোস্টে প্রেস সচিব বলেন, বিশেষজ্ঞদের মতে এই ধরনের জরিপ কোনো নিরপেক্ষ গবেষণার অংশ নয়; বরং ধীরে ধীরে অপরাধমূলক ইতিহাসকে আড়াল করার একটি প্রচেষ্টা। তার ভাষায়, দলটির বিরুদ্ধে থাকা দীর্ঘ দমন-পীড়নের দায় পুনর্বাসনের নয়, বরং জবাবদিহির দাবি তোলে।
শফিকুল আলম উল্লেখ করেন, বিএনপির শাসনামল নয়, বরং টানা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগই দেশে ভয়ভিত্তিক রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করেছিল। বিরোধী রাজনৈতিক সমাবেশে হামলা, হতাহত, সড়ক দখল ও আগ্নেয়াস্ত্রের অবাধ উপস্থিতি– এসব ঘটনাই সেই সময়ের স্বাভাবিক চিত্র ছিল। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে সহিংসতায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কে দিন কাটিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তার মতে, শেখ হাসিনার সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কৌশল হিসেবে জনগণের ভয়কে হাতিয়ার করেছিল। গত জুলাই-আগস্টের আন্দোলন দমন করতে সক্ষম হলে সরকার আরও দুই দশক ক্ষমতায় থাকতে পারত– এমন বিশ্লেষকদের মতামতও তিনি তুলে ধরেন। কিন্তু নতুন প্রজন্ম ভয়কে উপেক্ষা করে রাস্তায় নামায় হাসিনা সরকার শেষ পর্যন্ত বুঝতে পারে– গণহত্যা দিয়ে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা যায় না।
শফিকুল আলম প্রশ্ন তোলেন– জনপ্রিয়তা জরিপ কি ইতিহাস মুছে ফেলতে পারে? আজকে ১০ শতাংশ বা ২০ শতাংশ সমর্থন পাচ্ছে– এ গণনা কি অর্থবহ?
তিনি বলেন, ‘ফাইয়াজসহ আন্দোলনে নিহত তরুণদের স্মৃতি যখন এখনও তাজা, তখন এই ধরনের জরিপ শহীদদের প্রতি অবমাননার শামিল।’
তিনি আরও মন্তব্য করেন, ভবিষ্যতে রাজনৈতিক জরিপের প্রয়োজন হতে পারে, তবে তার আগে চাই জবাবদিহি। আওয়ামী লীগকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে, নিজেদের অতীত খোলামেলা স্বীকার করতে হবে এবং কোনো অজুহাত ছাড়াই সত্য প্রকাশ করতে হবে। জবাবদিহি ছাড়া স্বাভাবিকীকরণ হতে পারে না।
মন্তব্য করুন