বিশেষ প্রতিবেদক: আমার স্বামী নিরহ মানুষ। কখনো কারো সাথে ঝগড়া করেনি। ব্যবসার পাশাপাশি এলাকার অসহায় মানুষের পক্ষে কথা বলে। তাই আমার স্বামীকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে জবাই করে হত্যার চেষ্টা করেছে ভাইস চেয়ারম্যান রশিদ মিয়া। আমার স্বামীকে হত্যা করে লাশ ৩ টুকরো করে বস্তায় ভরার নির্দেশ দিয়েছে ভাইসচেয়ারম্যান। এই পরিবার খুনি পরিবার। তাদের পরিবারে একের পর এক হত্যা করে পার পেয়ে গেছে। তাই আমার স্বামীকেও দিন দুপুরে হত্যার চেষ্টা করেছে। রোববার দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনে এসব কথা বলেন ঢাকার হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে কাতরানো মাসুদ করিমের স্ত্রী সামিরা জালাল সাবা। কক্সবাজার সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান রশিদ মিয়াসহ হামলাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে শতশত মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেয়।
বক্তারা বলেন, জনপ্রতিনিধি যদি ছিনতাইকারীদের শেল্টার দেয়, হত্যাকারীদের নির্দেশ দেয় তাহলে এমন জনপ্রতিনিধি দরকার নেই। কক্সবাজার সদর উপজেলায় হত্যাকারী পরিবারের কোন সদস্য ভাইস চেয়ারম্যান হবার যোগ্যতা রাখে না । কক্সবাজার স্টুডেন্ট সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ব্যবসায়ী হাজী মাসুদ করিম কোন অন্যায়কারী নয়। তাকে চোরের মতো দিনপুরে জবাই করেছে এটি চরম বর্বরতা।
মানববন্ধনে গুরতর আহত মাসুদ করিমের তিন সন্তানও প্লেকার্ডে বিভিন্ন দাবী তুলেন। মাসুদ করিমের বড় ভাই আবুল হাসনাত বলেন, জনপ্রতিনিধির ক্ষমতা দেখিয়ে আমার ছোট ভাইকে প্রাণে মেরে ফেলতে চেষ্টা করেছে ভাইস চেয়ারম্যান রশিদ মিয়া। গত গত ৩ জুন পৈত্তিক সম্পত্তি দেখার জন্য হাজিপাড়া শফিউল আলমের বাড়ি পর্যন্ত গেলে উৎপেতে থাকা অস্ত্রশস্ত্র একদল সন্ত্রাসী মাসুদ করিমের উপর হামলে পড়ে। এক পর্যায়ে ওই হামলাকারীদের উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রশিদ মিয়া মোবাইল ফোনে লাউড স্পিকারে হত্যা করে তিন টুকরো করে বস্তায় ভর বলে নির্দেশনা দেন। ওই সময় কামরুল হাসান মুসা, মোহাম্মদ জুনায়েদ প্রকাশ মিন্টু, মোঃ শাকিব, শোয়েব মোহাম্মদ আকাশ প্রকাশ বাচাইয়া ও হামিদ মিয়া মাসুদ করিমকে উপর্যপূরী কোপাতে থাকে। তাদের আঘাতে মাটিতে লুটে পড়লে মাসুদ করিমকে জবাই করে ফেলে দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে বলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে হামলাকারীরা। জবাই করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে শুক্রবার (৭ জুন) কক্সবাজার সদর মডেল থানায় রশিদ মিয়াকে ১ নাম্বার আসামী করে ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার নং-২৮/৪০৫।
এদিকে এই মামলায় এখনো কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি। তাই মানববন্ধনে সবারই দাবী মাসুদ করিমকে হত্যার চেষ্টাকারী সকল আসামীকে গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা।
মানববন্ধনে মাসুদ করিমের বড় ভাই আরো বলেন, শুধুই যে আমার ছোট ভাই মাসুদ করিমকে কুপিয়ে ক্লান্ত হয়নি। এখন রাতের বেলা আমাদের বাড়িতে গিয়ে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রশিদ মিয়ার বাহিনী হানা দিচ্ছে। রশিদ মিয়ার ভাগ্নে বখাটে জিসানসহ একদল সন্ত্রাসী আমাকে হত্যার করার জন্য টার্গেট করেছে।
মাসুদ করিমের স্ত্রী সামিরা জালাল সাবাসহ মানববন্ধনে অংশ নেয়া গন্যমান্য ব্যক্তিদের দাবী-প্রশাসন চাইলে ১ ঘন্টার ভেতর আসামীদের গ্রেফতার করতে পারে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি আকুল আবেদন মাসুদ করিমের ৩ ছেলে সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে হলেও আসামীদের গ্রেফতার করে শাস্তি নিশ্চিত করা হউক।