আলোচিত তানভির হত্যাকাণ্ডের মামলা ঘোলাটে করার চেষ্টা
বিজিবির গোলাগুলিতে নিহত ডাকাত নেজামের মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা তানভিরের ৩ ভাইকে!

tanvir marder pic scaled
print news

বিশেষ প্রতিবেক, সিবিটুয়েন্টিফোর নিউজ
কক্সবাজারের আলোচিত মেধাবী ছাত্র তানভির হত্যাকাণ্ডের মামলাকে ঘায়েল করতে মামলার বাদী আবু সিনাসহ পরিবারের তিন ভাইকে বিজিরি সাথে গোগুলিতে নিহত ডাকাত নিজামের মৃত্যুর ঘটনায় মিথ্যা মামলাতে জড়ানোর চেষ্টা অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে একটি আবাসিক হোটেলে শহীদ তানভিরে পরিবার এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তানভিরের ভাইয়েরা বলেন, ২০১৮ সালের ২৯ জুন এএইচ তানভিরকে দিন দুপুরে মির্মম ভাবে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে নেজাম ডাকাতের পরিবার। ওই সময় আমার তিন ভাইকে সন্ত্রাসী কায়দায় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঘেরাও করে হত্যার চেষ্টারকালে আমার ভাই তানভির বাঁচাতে এগিয়ে আসলে আমার ভাইকে ধারালো ছুরির আঘাতে নির্মমভাবে হত্যা করে। তানভির হত্যা থেকে বাঁচতে গত ৩ জুন বিজিবির সাথে গোলাগুলিতে মৃত্যু হওয়া ডাকাত নেজাম উদ্দিনের মামলাতে জড়াতে চেষ্টা করছে নেজাম উদ্দিনের পরিবার। তার পিতা আবুল বশরও তানভির হত্যার অন্যতম আসামী।
সংবাদ সম্মেলনে তানভিরের পরিবার দাবী করেন, ১৯৯১ সালের প্রবল ঘূর্নিঝড়ে ঘরবাড়ি ভেঙ্গে মহেশখালীর ধলঘাটা থেকে কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়া বাঁচামিয়ার ঘোনায় জমি কিনে ঘরবাড়ি নিয়ে বসবাস করে তানভিরের পরিবার। ওই সময় থেকে ডাকাত নেজাম উদ্দিনের পরিবার তানভিরের পরিবারের কাছ থেকে চাঁদা দাবী করে আসছিলো। ২০১৮ সালের আমরা চাঁদা দিতে অস্বিকার করায় আমাদের নানান ভাবে হুমকি দিয়েছিলো। এক পর্যায়ে ১৮ সালের ২৯ জুন বাঁচা মিয়ারঘোনা মাঠে বাদী মোহাম্মদ আবু সিনা, মোহাম্মদ ইবনে সিনা ও আমার আরেক ভাই মোশারফকে সন্ত্রাসী ভাড়া করে দিনের আড়াইর দিকে আমাদের ঘিরে ফেলে। সেই দিন আমাদের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মারধর করতে করতে এক পর্যায়ে আমাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসলে আমার ভাই তানভিরকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে। ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আমি মোহাম্মদ আবু সিনা বাদী হয়ে কুখ্যাত ডাকাত নেজাম উদ্দিনকে ১ নাম্বার আসামী করে ১২ জনের নাম এজারভুক্ত করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করি। ওই মামলায় কুখ্যাত ডাকাত নেজাম উদ্দিন দীর্ঘ ৫ বছর কারাভোগ করে। কারাগার থেকে বের হয়ে কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা নাইক্ষংছড়ি ও রামুর গর্জনিয়ায় আরেক চিহ্নিত ডাকাত শাহীন ডাকাতের সাথে চোরাকারবারের সাথে জড়িয়ে পড়ে।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, পত্রিকার মারপতে আমরা জানতে পারি ওইদিন বিজিবির মোটরসাইকেলেও অগ্নিসংযোগ করেছে ডাকাত নেজাম উদ্দিনের বাহিনী। চোরাকারবারী ও ডাকাত নেজাম উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। বিজিবির সাথে গুলাগুলিতে ডাকাত নেজাম উদ্দিন মৃত্যু হলেও শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য শহীদ তানভির পরিবারের তিন ভাইকে আসামী করে কক্সবাজার আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে।
আমার মেধাবী ভাইকে হারিয়ে পুরো পরিবার বাকরুদ্ধ। এখনো বাবা-মা এখনো পাগল প্রায়। সবসময় তানভির তানভির বলে ডাকতে থাকে। আমার ভাই হত্যাকাণ্ডে আমরা এখনো বিচার পাইনি। মাননীয় আদালতে এই মামলার বিচার চলছে। কিন্তু এই মামলাকে ঘোলাটে করার জন্য কুখ্যাত ডাকাত নেজাম উদ্দিন পিতা আবুল বশর আমার তিন ভাইকে বিজিবির সাথে গুলাগুলিতে নিহত নেজাম উদ্দিনের বিষয়ে আমাদের জড়াতে চেষ্টা করছে। আমরা এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিচার বিভাগের কাছে বিষয়টি তুলে ধরতে চাই। আমরা আমার প্রিয় ভাই শহীদ এএইচ এম তানভির হত্যাকান্ডের বিচার চায়। পাশাপাশি আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে করা মিথ্যা মামলা থেকে রেহায় পেতে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
এদিকে গত ৩ জুন বিজিবির সাথে গোলাগুলি ও সরকারী কাজে বাধাঁর অভিযোগে বিজিবির হাবিলদার মোঃ হুমায়ুন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। যার নং- ১০/৩০০। ওই মামলায় আবুল বশরের ছেলে নিজাম উদ্দিনকে আসামী করে ১৭ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেছে বিজিবি। ওই দিন রামু থানায় ১৪৩, ১৮৬,৩০৭, ৪৩৫ ও ৩৫৩ ধারায় মামলাটি রুজু হয়।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে শহীদ তানভিরের পিতা হাজী সোলাইমান, মাতা মাশুকা বেগম, বড় ভাই মোহাম্মদ মহসিন, মোহাম্মদ আবু সিনা ও ইবনে সিনাসহ পুরো পরিবার উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *