কক্সবাজারের ২য় সর্ববৃহৎ ইয়াবা চালানের মূলহোতা
ইয়াবার মাফিয়া জাকিরের যতো সম্পদ

Picsart 24 07 06 23 10 55 957
{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{"addons":1},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":true,"containsFTESticker":false}
print news

মহিউদ্দিন মাহী:

জাকির হোসেন পুরো নাম। মানুষটি কতো বড় ইয়াবার মাফিয়া তার কোন হিসেব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা কোন সংস্থার এই পর্যন্ত নেই। সম্প্রতি চকরিয়ায় উদ্ধার হওয়া কক্সবাজারের সর্ব বৃহৎ সাড়ে ১২ লাখ ইয়াবার চালানের মূল হোতা হিসেবে নামে আসে জাকির হোসেনের। তার বাড়ি সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের লেঙ্গুর বিল এলকায়। বাবা হামিদ হোসেনকে দালাল হামিদ নামেই সবাই চিনে। সরাসরি মিয়ারমার থেকে ইয়াবা এনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অঢৈল সম্পদ গড়েছেন এই জাকির হোসেনের পুরো পরিবার। ইয়াবার মাফিয়া জাকির হোসেনের স্ত্রী আশেয়া ছাড়াও আত্বীয় স্বজনের নামে বর্তমান কয়েখটি ব্যাংক একাউন্টে ১৫ কোটি টাকার বেশি নগদ টাকা রয়েছে বলে সূত্র দাবী করছে। সম্প্রতি সাড়ে ১২ লাখ ইয়াবার সাথে গ্রেফতার হওয়া পাচারকারী শাহজহান আদালতে ১৬৪ ধারামতে স্বিকারোক্তি অনুযায়ী গ্রেফতার হয়েছে টেকনাফের সর্বোচ্চ ইয়াবার মাফিয়া জাকির হোসেন। গত ২৯ এপ্রিল চকরিয়ায় বহলতলী খালে জেলে সেজে অবস্থান নিয়ে ১২ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবার চালান উদ্ধার করে চকরিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী। একটি ইঞ্জিন চালিত নৌবোট থেকে ৫টি ড্রামের ভেতরে রাখা ১২৫ প্যাকেট স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় এসব ইয়াবা জব্দ করা হয়। বৃহৎ ইয়াবার চালান জব্দে প্রথমে গ্রেফতার হওয়া জাহজাহানের স্বিকারোক্তি অনুযায়ী গত ২৫ জুন কক্সবাজার শহরের ঝাউতলার সাইমন থেকে মূলহোতা জাকিরকে গ্রেফতার করে চকরিয়া থানা পুলিশ। ইতিমধ্যে ইয়াবার মাফিয়া জাকির হোসেন চকরিয়া থানায় রিমান্ডে রয়েছেন।

সূত্রমতে, টেকনাফের ইয়াবা জগতের সর্বোচ্চ মাফিয়া জাকির হোসেন ও তার পরিবার বিপুল সম্পদের তথ্য পেয়েছে এই প্রতিবেদক। জাকির হোসেনের স্ত্রী আয়েশার নামে বহু সম্পদের খোঁজও মিলেছে। তার মধ্যে-কক্সবাজার শহরের সাইমন হেরিটেসে  তার নামে রয়েছে বিলাশ বহুল ফ্লাট। টেকনাফের পল্লান পাড়া এলাকায় বাউন্ডারী দেয়া ৫৫ কড়া জমি। টেকনাফের হাতিয়ার ঘোনা নিজ বাড়ির ২য় তলায় দুই কোটি টাকা খরচ করে একটি মধ্যপ্রাচ্য ডিজাইনের প্লাট গড়েছেন জাকির। কক্সবাজার শহরের ঝাউতলায় জাকির হোসেনের মালিকানাধীন এনজিও’র ভাড়ার জন্য আধুনিক ডিজাইনের রয়েছে এক্স নোহা।  গত ৫ জুন একটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কক্সবাজার শহরের ঝাউতলা এলাকায় সাইমনে জাকির হোসেনকে গ্রেফতার করতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন অর্থাৎ ৬ জুন ওই প্লাট থেকে জাকিরের স্ত্রী ঘরে রক্ষিত মাদকের ৬৮ লাখ টাকা নিয়ে যায় টেকনাফে। সেখানে জাকির পিতা হামিদ হোসেনের কাছে রেখে আসেন এসব টাকা। পরে তাদের নাফ ভিউ ফিলিং ষ্ট্রেশন নামে একটি তেলের পাম্পের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে এই অবৈধ টাকা জমা রাখে। সূত্রের দাবী-স্ত্রী আয়েশা যখন ৬৮ লাখ টাকা শশুর হামিদ হোসেনকে জমা দিয়েছেন ওই সময় ২ লাখ টাকা খেয়ে ফেলে হামিদ হোসেন। ওই সময় জাকির হোসেন পুলিশের কাছে আটক হওয়ার আগে স্ত্রী আয়েশার সাথে ঝগড়া বাঁধে। ইয়াবা বিক্রির এসব টাকা সম্পূর্ন জমা রাখেন জাকির হোসেনের ছোট ভাই দেলওয়ার। দেলওয়ার নাফ ভিউ ফিলিং ষ্ট্রেশনের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর হিসেবে পদ ব্যবহার করছেন। এই তেলের পাম্পের মালিক জাকিরের বাবা হামিদ হোসেন।

সূত্র আরো জানায়, জাকির হোসেনের শশুর বাড়ি কক্সবাজারের ঈদগাঁওয়ের পোকখালী ইউনিয়নে। মিয়ানমার থেকে ইয়াবা বহন করতে পোকখালী এলাকায় দেড় কোটি কোটি ব্যয় করে একটি ট্রলার নির্মাণ করছেন জাকির হোসেন। কক্সবাজার শহরের কলাতলী এলাকায় জাকির হোসেনের বিশ^স্ত সহযোগী মোস্তফার মাধ্যমে ৭৩ লাখ টাকা খরচ করে একটি কটেজ নিয়েছেন। সেই কটেজে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা থেকে মাদক কিনতে আসা ব্যক্তিদের রাখেন। জাকির হোসেন কতো বড় ইয়াবার মাফিয়া এটি কোন ভাবে হিসেব করা যাচ্ছে না। কক্সবাজার জেলা ছাড়াও চট্টগ্রাম ও ঢাকাতেও তার ফ্লাট রয়েছে।

গত ১ মে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা বহকারী শাহজাহান আদালতে জবানবন্দিতে বলেন, প্রায় ৩৭ কোটি টাকা মূল্যের সাড়ে ১২ লাখ ইয়াবার চালানটি মিয়ানমার থেকে আনা হয়। চালানটি নিয়ে আসে ১২ জনের একটি দল। এই দলেরই একজন ঈদগাঁও উপজেলার বাসিন্দা মো. সোহেল। সোহেলের মাছ ধরার নৌযানে চালানটি প্রথমে আনা হয়। পরে সোহেলের নৌযান থেকে পাঁচটি ড্রামে ভরে এসব ইয়াবা তাঁর নৌযানে তুলে দেওয়া হয়েছে।

শাহজাহান বলেন, ২৮ এপ্রিল সকালে সোহেল তাঁকে খুটাখালীর লালঘোনা ব্রিজের নিচে খালে যেতে বলেন। নৌযান নিয়ে সেখানে যাওয়ার পর সোহেলের নৌযান থেকে খুটাখালী এলাকার সাজ্জাদ, মহেশখালীর আবু তাহেরসহ কয়েকজন পাঁচটি ড্রাম তাঁর নৌযানে তুলে দেন। জাকির হোসেন ইয়াবার চালানটি আনার মূল পরিকল্পনাকারী।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, মিয়ানমার থেকে ইয়াবার বৃহৎ চালানটি আনেন জাকির হোসেন। প্রথমে গ্রেফতার হওয়া শাহজাহানের স্বিকারোক্তি অনুযায়ী জাকির হোসেনকে কক্সবাজার শহর থেকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তিনি রিমান্ডে রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে জাকির হোসেন ইয়াবা বড় মাফিয়া বলে জানান ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *