গোলপাতার ক্যাফেটেরিয়া

36997d25ae92684b25bc9bfb5063dea2 6518ccb08dbcc
print news

পেছনে হোগলা বন আর পাশে বাঁশঝাড়, এক পাশের ছোট্ট লেকে ফুটে রয়েছে লাল শাপলা ও পদ্ম। এমনই এক ব্যতিক্রমী সৌন্দর্যে ঘেরা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাফেটেরিয়া। যেটি এরই মধ্যে গোলপাতার ক্যাফেটেরিয়া নামে সবার কাছে পরিচিতি পেয়েছে।

উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ সহজপ্রাপ্যতার কারণে ঘর তৈরিতে গোলপাতা ব্যবহার করেন। সে ঐতিহ্যকে স্মরণ করতেই গোলপাতা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন এ ক্যাফেটেরিয়া।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আগেও একটি ক্যাফেটেরিয়া ছিল। যেটি প্রায় ৩০ বছরের পুরোনো। সেখানে এখন নির্মাণ করা হচ্ছে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র। তার পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গোলপাতা দিয়ে ব্যতিক্রমী এ ক্যাফেটেরিয়া বানানো হয়েছে। গোলপাতার ছাউনি আর দৃষ্টিনন্দন কাঠামোর ক্যাফেটেরিয়ার উদ্বোধন করা হয়েছে সম্প্রতি। উদ্বোধনের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে স্থানীয় মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এটি। কেউ ক্যাফেটেরিয়ার ভেতরে বসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছেন, কেউ বিভিন্ন মুখরোচক খাবার খাচ্ছেন, আবার কেউ ক্যাফেটেরিয়ার ছবি তুলে পোস্ট করছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ক্যাফেটেরিয়ার নির্মাতাদের দাবি, গোলপাতা দিয়ে তৈরি এ ক্যাফেটেরিয়ার আয়তন প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বর্গফুট। যৌথভাবে এটির নকশা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের প্রধান অধ্যাপক শেখ সিরাজুল হাকিম ও সহকারী অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম। তবে গোলপাতার ছাউনি ব্যবহারের ধারণাটি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন।

ক্যাফেটেরিয়ার ছাউনি ৩০ ফুট উঁচুতে দেওয়া হয়েছে। নির্মাতারা জানান, চৈত্র থেকে জ্যৈষ্ঠ মাসে যখন তাপমাত্রা বেশি থাকবে, তখন গোলপাতার ছাউনির কারণে ইটের তৈরি পাকা ঘরবাড়ির তুলনায় এখানে তাপমাত্রা ৪ থেকে ৫ ডিগ্রি কম থাকবে। আবার শীতের সময় অধিকাংশ স্থানে মিষ্টি রোদের আমেজ পাওয়া যাবে। ছাউনিতে ব্যবহৃত গোলপাতা প্রক্রিয়াকরণ করা হয়েছে। ফলে এর স্থায়িত্ব স্বাভাবিকের তুলনায় চার থেকে পাঁচ বছর বাড়বে। এখানে একসঙ্গে প্রায় ২০০ মানুষের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। এর সামনের অংশ শিক্ষার্থী, আর পেছনের অংশ শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই ক্যাফে। সকালের নাশতা থেকে শুরু করে রাতের খাবার—সবই পাওয়া যায় এখানে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবেশের উন্নয়ন করাও জরুরি। ইট-পাথরের শহরের মধ্যে গোলপাতার ছাউনিতে গ্রামবাংলার ছোঁয়া পেয়েছে এই ক্যাফেটেরিয়া। এখানে সব সময় মানসম্মত খাবার সরবরাহ করতে হবে। এ বিষয়ে যে কমিটি রয়েছে, তারা নিয়মিত তদারক করবে।

রুবায়েত হোসেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *