আইসিটি’র এজ প্রকল্পে চাকরি পেলেন চকরিয়ার রায়হান

print news
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের এজ প্রকল্পে নিয়োগ পেলেন- কক্সবাজারের চকরিয়ার সন্তান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ হতে প্রথম শ্রেণীতে স্নাতকত্তর উত্তীর্ণ বিশেষভাবে সক্ষম বাহার উদ্দিন রায়হান। ১৫ মে (সোমবার) আগারগাঁও আইসিটি টাওয়ারে সম্মেলন কক্ষে শৈশবের দুই হাত হারানো বাহারের অদম্য প্রকল্পের প্রশিক্ষণ সমন্বয়কের নিয়োগপত্র তুলে দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এসময় হাত না থাকার পরও বাহারের পড়া লেখা শেষ করে মোটর সাইকেল ও রোলার স্কেট চালানোর মতো যে দক্ষতা অর্জন করেছে তা নিজেকে উজ্জীবিত ও উদ্যোমী করে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিকের সবচেয়ে বড় উদাহরণ বাহার উদ্দিন রায়হান। যেই স্মার্ট নাগরিকরা হবে উদ্যোমী বুদ্ধিদীপ্ত এবং সাহসী ও সংগ্রামী। তারা কোনো বাধা বা সমস্যায় দুর্বল হবে না। বঙ্গবন্ধুর ভাষায়- ‘কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না’- সেই অদম্য শক্তি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার স্মার্ট নাগরিকে পরিণত হওয়ার উজ্জল দৃষ্টান্ত আমাদের বাহার উদ্দীন রায়হান।
অনুষ্ঠানে নিজের শৈশবের ঘটনা তুলে ধরে বাহার উদ্দীন রায়হান জানান, ২০০৪ সালে দুর্ঘটনার পর সবাই পছন্দ করলেও কিছুটা বুলিং-এর শিকার হয়েছেন তিনি। কেননা সমাজ তাকে বোঝা মনে করতো। কিন্তু নিজ মেধা ও পরিশ্রম দিয়েই তিনি কারো ওপর ভরসা করতে চাননি। বরং যখন স্কুলে সাইকেল চালিয়ে যেতেন তখন তার পেছনেই বসে থাকতেন একজন শারীরিক ভাবে সক্ষম ব্যক্তি।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ৩০ অক্টোবর এক সন্ধ্যায় বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারে ঢুকে পড়া একটি চড়ুই পাখিকে বাঁচাতে গিয়ে ঝলসে যায় বাহার উদ্দিন রায়হানের হাত ও পায়ের তালু। এতে শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে যান পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র বাহার উদ্দিন রায়হান। এসময় রায়হান বাড়িতে একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলেছিল। সেখান থেকে যা আয় হতো তা দিয়েই তার পড়ালেখা আর সংসার চলতো। তার পাশাপাশি মা খালেদা বেগম বাড়িতে আয়বর্ধকমূলক কাজ করতেন। মুখে কলম আটকে কনুইয়ের সাহায্যে পরীক্ষা দিয়ে অদম্য রায়হান প্রত্যেক পাবলিক পরীক্ষায় যে কৃতিত্ব দেখিয়েছে তা অবিশ্বাস্য। শুধু তাই নয়, খেলাধুলাসহ সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত রয়েছেন তিনি। সর্বশেষ রায়হান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ হতে প্রথম শ্রেণীতে মাস্টার্স সম্পন্ন করে। এরপর দেশের প্রথম অ্যাপভিত্তিক অনলাইন রেস্টুরেন্ট ‘খাবার লাগবে’ এর সিইও হিসেবে কাজ করেছিলেন। কোন স্থানে যাতায়াতের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্যভাণ্ডার হিসেবে তিনি তৈরি করেন কেমনেযাব ডট কম (kemnejabo.com) এর মতো সাইট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *