মারধর ও ভাঙচুরের একটি মামলায় দুই আসামিকে শুনানি ছাড়াই জামিন দেওয়ার ঘটনায় জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৬ আগস্ট তাকে হাজির হতে বলা হয়েছে। হাইকোর্টে রিভিশন আবেদনকারীর আইনজীবী সারওয়ার আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারওয়ার আহমেদ বলেন, ওই মামলার দুই আসামির জামিন শুনানি ছিল গত ২৬ এপ্রিল। তবে কক্সবাজারের জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল একদিন আগেই কোনো রকম শুনানি না করে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। যা বেআইনি। বিষয়টি উচ্চ আদালতকে জানালে দুই আসামির জামিন বাতিল করে বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা চান হাইকোর্ট। ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হওয়ায় গত মঙ্গলবার হাইকোর্ট ওই বিচারককে ১৬ আগস্ট হাজির হতে বলেছেন।
এর আগেও আইন বহির্ভূতভাবে আসামিদের জামিন দেওয়ার অভিযোগে মোহাম্মদ ইসমাইলকে তলব করেছিলেন হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ। তখন নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে পার পান ইসমাইল।
আদালত সূত্রে জানা জায়, কক্সবাজারের টেকনাফে আব্দুর রহমান নামে এক ব্যক্তিসহ কয়েকজন গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আইনজীবী নূরুল আমিনের জমি দখল করতে যান। এতে বাধা দিলে তারা মারধর করেন। ঘটনার পরদিন জমির মালিকের পক্ষে দেখাশোনাকারী সামছুল ইসলাম বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় মামলা করেন।
ওই মামলার এক ও দুই নম্বর আসামি যথাক্রমে আব্দুর রহমান ও রফিক আহাম্মেদ গত ৬ মার্চ হাইকোর্ট থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। এরপর তারা ১৬ এপ্রিল কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। ওই সময় জেলা জজ আবেদনটি শুনানির জন্য ২৬ এপ্রিল দিন ধার্য করেন। নির্ধারিত তারিখে বাদীপক্ষের আইনজীবীরা উপস্থিত হয়ে জানতে পারেন আসামিদের আগের দিন জামিন দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জামিন আদেশ চ্যালেঞ্জ করে জমির মালিক আইনজীবী নূরুল আমিন হাইকোর্টে গত ৪ জুন রিভিশন আবেদন করেন। ওই আবেদনের শুনানি শেষে গত ৭ জুন দুই আসামির জামিন বাতিল করে জেলা জজের কাছে ব্যাখ্যা তলব করেন বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের বেঞ্চ। পরে ৯ জুলাই ব্যাখ্যা দেন মোহাম্মদ ইসমাইল। এতে সন্তুষ্ট না হয়ে আবার তলব করেন হাইকোর্ট।
জেলা জজের দেওয়া ব্যাখ্যায় বলা হয়, দুই আসামি ১৬ এপ্রিল আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। তবে ওই দিন আদালতে মামলার অতিমাত্রায় আধিক্য থাকায় এবং ওই সময়ে পবিত্র রমজান মাস থাকায় ঈদের পরপরই ২৫ এপ্রিল শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়। সে অনুযায়ী ২৫ এপ্রিল জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে মামলার গুণাগুণ বিবেচনায় আসামিদের জামিন মঞ্জুর করা হয়। শুনানিকালে সংবাদদাতাপক্ষকে নোটিশ আকারে খোঁজ করা হয়নি। তবে সংবাদদাতা পক্ষে অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন। সরল বিশ্বাসে ২৫ এপ্রিল আসামিদেরকে জামিন প্রদান করা হয়। এতে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কে এম মাসুদ রুমী বলেন, আসামিরা হাইকোর্টের দেওয়া সময়ের পরে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন বলে শুনেছি। এ জন্য জেলা জজকে তলব করা হয়েছে। সূত্র: আজকের পত্রিকা