বেশিরভাগ মানুষের গন্তব্যই হলো ‘সুখ’। জীবনে সুখী হওয়াটাই মূলত সাফল্য। এই সুখ আসলে কীসে, তা বেশিরভাগ মানুষই আবিষ্কার করতে পারে না। অন্যের চোখে যা সুখ, তার পেছনেই ছোটে বেশিরভাগ মানুষ। কিন্তু এমনও হতে পারে যে, তা আসলে তার গন্তব্য হওয়া উচিত নয়। সবার সুখ একই জিনিসে থাকে না। আবার অন্যকে দেখানোর চেয়েও সুখটা নিজে অনুভব করতে পারা জরুরি। যারা সুখী মানুষ, তাদের কিছু অভ্যাস থাকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন অভ্যাসগুলো মানুষকে সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্যে রাখে-
নিজেকে জাগিয়ে তুলুন
নিজেকে ভালো রাখার অভ্যাস সবচেয়ে জরুরি। সুখী মানুষেরা নিজেকে উজ্জীবিত রাখার জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়। নিজেকে উজ্জীবিত করার অনেক উপায় আছে এবং সেজন্য আপনাকে শিখতে হবে কোনটি আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো কাজ করে। কেউ হয়তো স্পা কিংবা ম্যাসেজ উপভোগ করে। কেউ আবার একা সময় উপভোগ করতে পছন্দ করে। নিজের মতো করে সাপ্তাহিক ছুটি কাটানো, ক্যাম্পিং, হাইকিং এবং জার্নালিং ইত্যাদি অভ্যাস নিজেকে উজ্জীবিত করার জন্য ভালো উপায় হতে পারে।
কৃতজ্ঞতার চর্চা করুন
প্রতি রাতে কৃতজ্ঞতা জার্নাল লিখে রাখার অভ্যাস শুরু করুন। এতে আপনার সাফল্য এবং সুখ আকাশচুম্বী হবে। আপনার প্রতিটি দিনে ঘটে যাওয়া তিনটি জিনিস লিখে রাখুন, যার জন্য আপনি কৃতজ্ঞ। দিনটি সুখী অনুভব করার জন্য এটি কেবল একটি দুর্দান্ত উপায়ই নয়, এর মাধ্যমে ইতিবাচকতা এবং কৃতজ্ঞতার চোখে আপনার জীবন এবং দৈনন্দিন পরিস্থিতি দেখতেও শুরু করবেন। চারপাশের সবকিছু লক্ষ্য করে দেখবেন যে, আপনি ভাগ্যবান এবং সবকিছু আপনার কল্পনার চেয়েও ভালো হচ্ছে।
সঠিক সময়ে কাজ শেষ করুন
সফল ব্যক্তিরা জানেন যে তাদের ক্যারিয়ার বা ব্যবসার চেয়েও জীবনে আরও অনেক মূল্যাবান কিছু রয়েছে। ল্যাপটপ কখন বন্ধ করতে হবে তা জানুন এবং বন্ধু, পরিবার, ভ্রমণ বা অন্যান্য আগ্রহের সঙ্গে সংযোগ করুন। জীবন উপভোগ করুন এবং আপনাকে খুশি করে এমন বিষয়গুলো বেছে নিন।
কমেডি অভিনেতা স্টিভ হার্ভে তার সাফল্যের পেছনে হাসিকে মূল কারণ হিসাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, হাসি আনন্দকে ডেকে আনে এবং নেতিবাচকতাকে মুক্তি দেয়। এর রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতাও। মায়ো ক্লিনিকের মতে, হাসি মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেয়। এটি স্বাস্থ্যকর অক্সিজেন গ্রহণের প্ররোচনা দেয়, এন্ডোরফিন মুক্ত করে এবং উত্তেজনা প্রশমিত করে।
বাইরে যান
প্রতিদিন সতেজ বাতাস এবং রোদের জন্য কিছু সময় রাখুন। প্রকৃতির মধ্যে দিনের কিছুটা সময় কাটানোর অনেকগুলো উপকারিতা রয়েছে। এই অভ্যাসের মাধ্যমে আপনি দৈনন্দিন উদ্বেগ, চাপ এবং ভয় থেকে দূরে থাকতে পারবেন। পাশাপাশি জীবনকে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে পারবেন।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
ব্যায়াম হলো সুখে থাকার আরেকটি অভ্যাস। হাসির মতো ব্যায়ামও এন্ডোরফিন মুক্ত করে আমাদের মেজাজ উন্নত করে। ব্যায়াম মানসিক চাপ কমাতে, উদ্বেগ বা বিষণ্নতার অনুভূতি এড়াতে এবং আত্মসম্মান বাড়াতে কাজ করে। দিনে মাত্র ২০ মিনিট হাঁটা উপকারী হতে পারে। সহকর্মীদের সঙ্গে হাঁটা, উইকএন্ড হাইক ম্যাপিং বা জিমে যাওয়ার অভ্যাস করুন।
সুখী জীবন কল্পনা করুন
সুখী ব্যক্তিরা ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বপ্ন দেখে কারণ এটি তাদের খুশি করে। প্রত্যাশা এবং কল্পনা সুখের জন্য দুর্দান্ত হাতিয়ার। আপনি যখন ছুটির পরিকল্পনা করেন তখন কি খুশি হন না? এটি আসলে ছুটিতে থাকার মতই আরামদায়ক। একটি সুখী ভবিষ্যত কল্পনা করতে ভুলবেন না। আপনি আপনার জীবনে যা অনুভব করতে চান তার স্বপ্ন দেখে আনন্দ অনুভব করতে শিখুন।