আসন্ন দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে করতে কক্সবাজারজুড়ে ‘বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা’ জোরদার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। পাশ্ববর্তী জেলা বান্দরবানে চেকপোস্ট, গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল কার্যক্রম বাড়িয়েছে বিশেষ এই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
জেলায় ১৫১টি প্রতিমা ও ১৬৪টি ঘট পূজা মিলিয়ে মোট ৩১৫টি মণ্ডপে পূজা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর থেকে কক্সবাজার শহরজুড়ে চলে র্যাবের রোবাস্ট পেট্রোল। একই সঙ্গে পূজামণ্ডপগুলোর আশপাশে জোরদার করা হয় নিরাপত্তা। দুর্গাপূজা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এমন কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়েছেন সনাতন ধর্মালম্বীরা।
স্থানীয় একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী জানান ‘গত বছর ধরে দুর্গাপূজার সময় নাশকতার আশঙ্কা থাকে। এবছরও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ জোরদার করা হয়েছে। প্রতিদিনই পুলিশের পাশাপাশি র্যাব টহল দিচ্ছে। এতে স্বস্তি পাচ্ছি, নিরাপদে পূজা উৎসব উদযাপন করতে পারব।’
জেলাজুড়ে বিশেষ নিরাপত্তা জোরদার রাখা হয়েছে। বিশেষ করে, উখিয়া ও টেকনাফে পূজামণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ জানান স্থানীয় সচেতন মহল। কারণ, উখিয়া ও টেকনাফে ৩৩টি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির রয়েছে।’
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) থেকে শুরু হচ্ছে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। যা চলবে আগামী ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশ বলেন, কাল থেকে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে। এর আগে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তারা আশ্বস্ত করেছে, নিরাপদে পূজা উদযাপন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাস্তবে তা এখন দৃশ্যমান রয়েছে। প্রতিদিনই পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি টহল দিচ্ছে এবং খোঁজ-খবর রাখছে। আশা করি, পূজার শেষ দিন পর্যন্ত এভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে।
এদিন দুপুরে কক্সবাজার শহরের পূজা মণ্ডপগুলো পরিদর্শন করেন র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন। এ সময়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, নাশকতাকারি বা অপ্রীতিকর ঘটনা সৃষ্টিকারীদের হাত গুড়িয়ে দেয়া হবে।
এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন আরও বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চেকপোস্ট, গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে। পূজা উপলক্ষে যেকোনো ধরনের নাশকতা বা অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে কক্সবাজারের প্রবেশপথসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে র্যাবের চেকপোস্ট কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় চেকপোস্ট স্থাপন ও টহল জোরদারসহ পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন থাকছে।
তিনি বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে কোনো সুযোগসন্ধানী, দুষ্কৃতকারী ও অশুভচক্র যাতে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কোনোরূপ হামলা, পূজামণ্ডপ ভাঙচুর বা কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটাতে পারে, সেজন্য চেকপোস্ট ও নজরদারি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। যেকোনো পরিস্থিতি কঠোরভাবে প্রতিহত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, জেলায় ১৫১টি প্রতিমা ও ১৬৪টি ঘট পূজা মিলিয়ে মোট ৩১৫টি মণ্ডপে পূজা হবে। পূজা শান্তিপূর্ণ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে প্রতিটি পূজামণ্ডপে ২০ জন করে মোট ৩ হাজার ২০ জন স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন।