১৮/২০ বছর আগেই মিয়ানমার থেকে পুরো পরিবার নিয়ে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ায় ঢুকে পড়েছিলো সাজু-কালাবদার পরিবার। এরপর আস্তে আস্তে শাহপরীর দ্বীপে স্থান নেয়া বেশ কয়েকটি রোহিঙ্গাকে টান দেয় দুরন্তর চালাক রোহিঙ্গা নারী সাজু বেগম। কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়ারছড়ার সাজু বেগমের মেয়ে পারভীনকে বিয়ে দেয় আরেক রোহিঙ্গা সামশুল আলমকে। পুরো পরিবার রোহিঙ্গা থেকে দাগ মুছতে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে মোটা টাকার বিনিময়ে ইতিমধ্যে জাতীয়তা কার্ডও বানিয়ে ফেলেছেন সাজু বেগম, তার স্বামী কালাবদা। পুরো পরিবার যেন টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশী নাগরিক। রোহিঙ্গা পরিবার টাকার বিনিময়ে জাতীয়তা কার্ড বানানোর ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উত্তর নুনিয়ারছড়ার সমাজ কমিটির মোহাম্মদ আলম, আবুল কালাম, আলাউদ্দিন, জাকের সওদার, বৃদ্ধ বাদশা মিয়া এই প্রতিবেদককে জানান, সাজু বেগম এবং তার স্বামী কালাবদা ২০০০ সালের দিকে এসে ভাড়া বাসায় ছিলো। পরে মাদক ব্যবসায় যোগদান করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন তারা।
স্থানীয়মতে, সাজুর স্বামী কালাবদা বছরখানিক আগেও জসিম বহদ্দারের ট্রলারে জেলে হিসবে কাজ করেছেন। কিন্তু কয়েক বছরের ব্যবধানে বিলাশবহুল দোকান, ৫ তলা বাড়ি, নামে-বেনামে প্রচুর সম্পদ কিনেছেন শামশু ও শাশুড়ী সাজু। পুরো পরিবার রোহিঙ্গা হয়েও মোটা টাকার বিনিময়ে হয়ে পড়েছেন বাংলাদেশী। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানের মাধ্যমে ইতিমধ্যে শামশু ও সাজু জাতীয়তা কার্ড বানিয়েছেন।
নুনিয়ারছড়ার লাষ্ট মাথা এলাকার সচেতন বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা নারী সাজু ৫০ বছরের বয়সী হলেও অত্যন্ত দুরন্ত বুদ্ধিমতি। তার স্বামী কালাবদা রোহিঙ্গা হওয়ায় সুযোগে সেখানকার মানুষের সাথে সখ্যতা তৈরি করে মিয়ানমার থেকে সরাসরি ট্রলারে করে ইয়াবা মজুদ করতো তার বাড়িতে। এসব ইয়াবা মেয়ের জামাতা শামসুল আলমের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তরে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতেন। কক্সবাজার শহরের হোটেল-মোটেল জোনে ইয়াবা পাচার করার জন্য শক্ত একটি টিমও রয়েছে তাদের। ইতিমধ্যে ইয়াবা ব্যবসা করে কক্সবাজার শহরের জিলানী মার্কেটের পেছনে নতুন নির্মিত ভবন থেকে ৭০ লাখ টাকার একটি দোকানও ক্রয় করেছেন জামাতা শামসুল আলম। সেই দোকানে প্রায় দেড় কোটি টাকার মালামাল মজুদ করা হয়েছে। নুনিয়ারছড়ার শিল্প এলাকায় ১০ লাখ টাকা করে গন্ডায় ৬ গন্ডা জমি কিনে ৫ তলা ভবন নির্মাণ করছে। সদরের খুরুশকুলের কুলিয়া পাড়ায় নামে বেনামে জমি কিনেছেন কানি কানি। শহরের বাজারঘাটা এলাকায় ওয়ানটাইম চায়ের কাপের দোকান রয়েছে একটি।
এলাকাবাসীর দাবী, সাজু ও তার মেয়ের কাছে ৫০ ভরি উপরে স্বর্ণালংকার রয়েছে। পুরো প্রশাসন যখন মরণব্যাধি ইয়াবা ধরতে ব্যস্ত সময় পার করছে ঠিক এমন সময়ে সাগর পথে ইয়াবা মজুদ করে দেদারসে ইয়াবা পাচার করছে পুরো দেশে এই রোহিঙ্গা পরিবার।
কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার পাতিনেতা-কেতা অনেকেই তাদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে এই মাদক ব্যবসা নিরপদে রেখেছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রশাসন প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ী শামসুল আলম ও তার শাশুড়ী সাজুকে না ধরলে নুনিয়ারছড়া এলাকায় ইয়াবা ব্যবসা কখনো বন্ধ হবে না।