দীর্ঘ অপেক্ষার ইতি টেনে প্রথমবারের মতো সমুদ্রযাত্রা শুরু করেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রমোদতরী আইকন অব দ্য সিস।
স্থানীয় সময় শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার মিয়ামি বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে জাহাজটি। গন্তব্য পূর্ব ও পশ্চিম ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ। সাত দিনের সমুদ্রযাত্রা শেষে গন্তব্যে পৌঁছাবে প্রমোদতরীটি।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইকন অব দ্য সিস লম্বায় প্রায় ১২০০ ফুট, যা বিশ্বখ্যাত জাহাজ টাইটানিকের চেয়ে পাঁচগুণ বড়। এর ওজন ২ লাখ ৫০ হাজার ৮০০ টন। একসঙ্গে জাহাজে ৭ হাজার ৬০০ যাত্রী চড়তে পারবেন। জাহাজটি নির্মাণ করেছে রয়্যাল ক্যারিবিয়ান গ্রুপ।
আইকন অব দ্য সিসে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। ওয়াটার স্লাইড, সুইমিংপুল, হ্রোয়ালপুল থেকে শুরু করে ৪০টি বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রমোদতরীতে। এতে ছয়টি ওয়াটার স্লাইড, সাতটি সুইমিংপুল ও ৯টি বিশেষ ধরনের পুল থাকছে। এমনকি এতে রয়েছে থিম পার্ক, কৃত্রিম বিচ। পানাহার ও আমোদপ্রমোদের সব ব্যবস্থা তো থাকছেই।
বিশাল এই জাহাজে রয়েছে ২৮ ধরনের কেবিন। এদের মধ্যে ৮২ শতাংশ ঘরে ৩ থেকে ৪ জন মানুষ খুব জাহাজে থাকতে পারবেন। এ ছাড়া ব্যালকনি রয়েছে ৭০ শতাংশ কেবিনে। অনেকে আবার পরিবার নিয়ে এই ইতিহাসের সাক্ষী হতে চাইবেন। তাদের কথা মাথায় রেখে আলাদা সুযোগ-সুবিধা রেখেছে রয়্যাল ক্যারিবিয়ান গ্রুপ।
প্রদীপের নিচে যেমন থাকে অন্ধকার তেমনি বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রমোদতরী ঘিরেও তৈরি হয়েছে একটি শঙ্কা। এর নাম মিথেন শঙ্কা। পরিবেশবাদীরা সতর্ক করে বলেছেন, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) চালিত এই জাহাজ বাতাসে ক্ষতিকারক মিথেন গ্যাস নির্গমন করবে।
ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অন ক্লিন ট্রান্সপোর্টেশনের (আইসিসিটি) মেরিন বিভাগের পরিচালক ব্রায়ান কমার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, এটি ভুল পথে একটি পদক্ষেপ। আমাদের অনুমান হলো সামুদ্রিক জ্বালানি হিসেবে এলএনজি ব্যবহার করলে প্রচলিত তেলের তুলনায় ১২০ শতাংশ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হয়।
ভয়ংকর গ্রিনহাউস গ্যাস হিসেবে পরিচিত মিথেন ২০ বছরের মধ্যে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের চেয়ে ৮০ গুণ বেশি উষ্ণতা ধরে রাখে। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ঠেকাতে এই গ্যাসের নির্গমন কমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়। তবে রয়্যাল ক্যারিবিয়ানের এক মুখপাত্র দাবি করেছেন, আইকন অব দ্য সিস ২৪ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয়ী।