আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে চাল, চিনি, তেল ও খেজুরে ভ্যাট ও শুল্ক কমিয়েছে সরকার। এর মধ্যে খেজুরে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ, চালে রেগুলেটরি ডিউটি ২০ শতাংশ, তেলে মূসক ৫ শতাংশ ও চিনিতে শুল্ক প্রত্যাহার করেছে রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) পৃথক চার প্রজ্ঞাপনে এনবিআর জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে। আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত খেজুরের, ১৫ এপ্রিল ভোজ্যতেলে, ৩১ মার্চ পর্যন্ত চিনিতে ও ১৫ মে পর্যন্ত চালে এই সুবিধা বলবৎ থাকবে।
গত ৩০ জানুয়ারি চাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুর—এ চার নিত্যপণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া এই চার পণ্যে শুল্ক কমাতে এনবিআরকে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
নতুন প্রজ্ঞাপনে পরিশোধিত-অপরিশোধিত প্রতিটন চিনিতে আমদানিতে শুল্ক দেড় হাজার টাকা থেকে কমিয়ে এক হাজার টাকা করা হয়েছে। এর বাইরে অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি), ৩ শতাংশ অগ্রিম কর (এটি) এবং ৩০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) রয়েছে। আর পরিশোধিত চিনিতে বর্তমানে ভ্যাট ১৫ শতাংশ, এআইটি ৫ শতাংশ, এটি ৫ শতাংশ এবং আরডি রয়েছে ৩০ শতাংশ।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধ অনুযায়ী ভোজ্যতেলে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। বর্তমানে বছরে ২০ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ২ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়। বাকি ১৮ লাখ টন আমদানি করতে হয়। ভোজ্যতেল আমদানির ওপর বর্তমানে ভ্যাট ১৫ শতাংশ ছিল, নতুন প্রজ্ঞাপনে তা কমানো হয়েছে।
রমজানে খেজুরের চাহিদা থাকে বেশি। চলতি অর্থবছরে খেজুরের ওপর বেশি শুল্ক-কর আরোপ করা হয় বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে করেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে শুল্ক প্রত্যাহারের অনুরোধ জানায়। নতুন প্রজ্ঞাপনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড খেজুর আমদানিতে ২৫ শতাংশ থেকে শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ করেছে।
দেশে বছরে প্রায় ৫০ হাজার টন খেজুরের চাহিদা রয়েছে, যার পুরোটা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে আমদানি করা হয়। খেজুরের মানও বিভিন্ন ধরনের। বর্তমানে খেজুরে আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ। এছাড়া ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ৫ শতাংশ এআইটি, ৫ শতাংশ এটি এবং ৩ শতাংশ আরডি রয়েছে।
অন্যদিকে চাল আমদানিতে আরডি বা নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া চাল আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে।