সিবি টুয়েন্টিফোর ডেস্ক:
পুলিশের সামনেই সাংবাদিককে তুলে নেওয়ার চেষ্টা
ছাত্রলীগকর্মী পরিচয় দেওয়া আবুল খায়ের আরাফাত
পুলিশের সামনেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) সাংবাদিক সমিতির সদস্য মাসুদ রানাকে হেনস্তা করেছে ছাত্রলীগকর্মী পরিচয় দেওয়া আবুল খায়ের আরাফাত। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মেট্রোপলিটন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রহমান মুকুল গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফ করার সময়ে ওই সাংবাদিককে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেন তিনি। এর একটি ভিডিও এই প্রতিবেদকের কাছে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশের সহায়তায় স্থান ত্যাগ করেন ওই সাংবাদিক।
মাসুদ রানা নিউজ পোর্টাল ঢাকা টাইমসের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য।
মাসুদ রানা বলেন, গত ২৯ জুলাই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার সময় আমি পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে (ভিডিও করলে) ছাত্রলীগ আমাকে নিষেধ করে এবং কাজ চালিয়ে যাওয়ায় দূর থেকে আমাকে গালিগালাজ করে ও দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। তারই জের ধরে আজ (ওসির প্রেস ব্রিফিংয়ের ভিডিও নেওয়ার সময়) ছাত্রলীগের কর্মী দাবি করা এ.কে আরাফাত সকলের সামনেই আমাকে পেছন থেকে টেনেহিঁচড়ে পাশে নিয়ে যায় এবং আমার কাজে বাধা দেয়। এ সময় হাতে খামচি দিয়ে ধরে এবং তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এতে আমি হাতে আঘাত পাই ও রক্ত বের হয়। জোরাজোরির একপর্যায়ে তার সঙ্গে যেতে না চাইলে সে আমার পেট চেপে ধরে এবং আমি চিৎকার করলে সেখানে উপস্থিত পুলিশ তার হাত থেকে ছাড়িয়ে আমাকে ওই স্থান ত্যাগ করতে সহযোগিতা করে। আমি এখনো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং পেশাগত দায়িত্ব পালন নিয়ে শঙ্কিত।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আবুল খায়ের আরাফাতের কাছ থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
বরিশাল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় পাশ থেকে একজনকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। আমি দেখে ছেলেটিকে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে সহযোগিতা করি। ছেলেটি তখন আমাকে বলে সে সাংবাদিক। ছেলেটাকে কে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল, তাকে চেনেন না বলে জানান ওসি মুকুল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, বিষয়টি ইতোমধ্যে আমার নজরে এসেছে। যেহেতু এটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনে ঘটেছে, আশাকরি তারা বিষয়টি দেখবেন। এ ছাড়াও, এই ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পেলে তার যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে দোষীর উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করবেন বলে জানান উপাচার্য।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। ছাত্রলীগকর্মী পরিচয়ধারী আবুল খায়ের আরাফাতের বিরুদ্ধে ২০২১ সালে ট্রেইনি কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়ার লিখিত পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে গিয়ে পুলিশের কাছে আটক, হত্যার ভয় দেখিয়ে মোবাইল ও নগদ অর্থ ছিনতাইয়ের মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের একটি মিটিংয়ে হামলার নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।