এম.শিবলী সাদেক পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া থেকে সারাদেশের সাথে সহজ যাতায়াতের একমাত্র পথ মগনামা লঞ্চঘাট নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন ইজারাদার ও বোট মালিকেরা। ছাত্র জনতার ব্যানারে আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন নেতারা ঘাট পারাপারের ভাড়া কমানো ও ইজারা বাতিলে সোচ্চার হয়েছেন।
গত রোববার দুপুরে কক্সবাজার শহরের ঘুনগাছ তলায় কুতুবদিয়ার কয়েক শতাধিক ছাত্র-জনতা ব্যানার, ফেস্টুন ও বিভিন্ন প্লেকার্ড হাতে একটি মানববন্ধন করেন। এসময় ওই এলাকায় ঘণ্টা দেড়েক যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে আন্দোলনকারীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করে। আন্দোলন থেকে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া-মগনামা নৌপথে অনিয়ম, হয়রানি, দুর্নীতি, নৈরাজ্য ও লুটপাট বন্ধসহ ৬ দফা দাবি জানানো হয়।
এদিকে ইজারাদার আবু হানিফ বলেন, ১৪৩১ বাংলা সনের জন্য নিলাম প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে ১ কোটি ৬৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা রাজস্ব দিয়ে দরবার-মগনামা পারাপার ঘাট ইজারা নিই। এখন পারাপারের যে ভাড়া নেয়া হচ্ছে তা ২০২২ সাল থেকে নির্ধারিত। জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় বর্তমানে গাম বোট ৩০, স্পীড বোট ৮০ হারে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
অপর ইজারাদার নুরুল ইসলাম বলেন, ২ কোটি ৮৯ লাখ ২৫ হাজার টাকায় বড়ঘোপ-মগনামা পারাপার ঘাট ইজারা নিয়েছি। ইজারা মূল্য ও নৌযান পরিচালনার খরচের সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমরা ভাড়া তুলে আসছিলাম। কিন্তু সম্প্রতি সাবেক ইজারাদারের সহযোগী ও আ’লীগ নেতা হানিফ বিন কাসেম, কুতুবদিয়া উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম খোকন, লেমশিখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য সাবের আহমদ ও কুতুবদিয়া ইউএনও অফিসের সহকারী জুবায়ের রাসেলের যোগসাজশে একটি পক্ষ ইজারা বাতিলের উদ্দ্যেশ্যে কিছু ছাত্রদের উস্কে দিয়ে অযৌক্তিক আন্দোলনে রাস্তায় নামিয়েছে। কারণ, ইজারা বাতিল করলে আমাদের ইজারা মূল্য ফেরত দিতে হবে। আমরা মনে করছি, সাবেক ইজারাদার ও কয়েকজন আওয়ামীলীগ নেতা মিলে এসব আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে।
মগনামা-কুতুবদিয়া ঘাট পারাপার বোট মালিক সমিতির সভাপতি নাছির উদ্দীন বলেন, গাম বোট ৪০ টাকা ও স্পীড বোট ১২০ টাকা হারে জনপ্রতি আমরা ভাড়া আদায় করে আসছিলাম। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আন্দোলনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় বর্তমানে ৩০ টাকা ৮০ টাকা হারে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এতে আমরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। এভাবে চলতে থাকলে আমরা কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হবো।
আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রসমাজের প্রতিনিধি কাজী তাহমিদ বলেন, এটি কুতুবদিয়া উপজেলাবাসীর গণদাবি। ঘাট পারাপারে হয়রানি ও ভাড়া নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ছাত্র জনতা মিলে আমরা যৌক্তিক আন্দোলন করেছি। এটি কোন দল বা শ্রেণীর কোন পক্ষপাতদুষ্ট আন্দোলন নয়। জেলা প্রশাসন আপাতত একটি ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছেন। একইসাথে জেলা প্রশাসন একটি কমিটির মাধ্যমে সম্ভাব্যতা যাচাই করে ভাড়া নির্ধারণের আশ্বাস দিয়েছেন। তাই আপাতত আমাদের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।