নারায়ণগঞ্জ ও খুলনার দৌলতপুর মোকাম থেকে বাংলাদেশের কাঁচা পাট বর্তমানে বিশ্বের ১২টি দেশে রফতানি হচ্ছে।

বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশন ও পাট অধিদফতরের তথ্য মতে, বিদায়ী ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ১২টি দেশে কাঁচা পাট রফতানি হয়েছে। এই ১২টি দেশের মধ্যে রয়েছে-ভারত, পাকিস্তান, চীন, নেপাল, ব্রাজিল, যুক্তরাজ্য, ভিয়েতনাম, তিউনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, আইভরি কোস্ট, যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড।

অন্যদিকে, বর্তমানে বেলজিয়াম, কিউবা, মিশর, এলসালভেদর, ইথিওপিয়া, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইতালী, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, স্পেন, তানজানিয়া, জায়ার, রোমানিয়া ও ফিলিপাইনে পাট রফতানি বন্ধ রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ১২টি দেশে কাঁচাপাট রফতানি হয়েছিল। এর মধ্যে ভারতে সবচেয়ে বেশি পাট রফতানি হয়েছে। এরপর নেপাল, পাকিস্তান, আইভরিকোস্ট, চীন, যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় রফতানি হয়েছে।

পাট ব্যবসায়ীরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি, ভারত কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা, কোভিড-১৯ (করোনা), ডলারের মূল্য উঠানামা প্রভৃতি কারনে কাঁচা পাট রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর সূত্রে জানা যায়, ২০১০-২০১১ অর্থবছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ২১ লাখ ১২ হাজার ৪০০ বেল পাট রফতানি হয়েছে, যা থেকে আয় ছিল একহাজার ৯০৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আর বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের মে মাস পর্যন্ত একহাজার ৯৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা মূল্যের সাত লাখ ৬৭ হাজার ৫৬৯ বেল পাট রফতানি হয়েছে।

পাট রফতানি বিষয়ে গাজী জুট ইন্টারন্যাশনালের গাজী শরিফুল ইসলাম জানান, পাট উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে মানসম্মত পাট বাংলাদেশে উৎপন্ন হয়। ২০০৯-২০১০ সালের পর দুই-তিন দফায় পাট রফতানি বন্ধ হয়েছে। যেসব দেশ বাংলাদেশের পাটের উপর নির্ভরশীল ছিল, রফতানি বন্ধ হওয়ায় পরবর্তিতে সেসব দেশের বাজার হারিয়েছে বাংলাদেশ। এ কারণে পাটের বাজার কমেছে।

তিনি আরো জানান, আগে সড়কপথে ভারতে পাট যেত। কিন্তু বর্তমানে জলপথে জাহাজে পাঠাতে সময় লাগছে বেশি, ব্যয়ও বেড়েছে। অবশ্য এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা। তাদেরও কয়েকগুণ খরচ বেড়েছে।

দেশের বন্দরগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্র বন্দর, বেনাপোল ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের মাধ্যমে সর্বোচ্চ পরিমাণ কাঁচা পাট বিদেশে রফতানি হয়।

বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএ) চেয়ারম্যান ফরহাদ আহমেদ আকন্দ বলেন, ‘বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ ও খুলনার প্রায় ২৫ জন ব্যবসায়ী কাঁচা পাট রফতানির সাথে জড়িত।’

তবে পাটের নতুন বাজার সৃষ্টি ও রফতানি বৃদ্ধির জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।