কক্সবাজারের চকরিয়ায় স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে দুই সন্তানের জননীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে পাষণ্ড স্বামী। এ ঘটনায় উল্টো স্ত্রীর নামে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে স্বামী মোঃ ছালামের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে চকরিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের মন্ডল পাড়া এলাকায়।
মারধরের এ ঘটনায় স্ত্রী রোজিনা আক্তার (২৫)বাদী হয়ে চকরিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের মন্ডল পাড়ার মনির আহমদের ছেলে মোঃ ছালামকে আসামি করে চকরিয়া থানায় এজাহার জমা দিয়েছেন।
এজাহার সুত্রে অভিযোগে জানা যায়, রোজিনা আক্তারের স্বামী অন্য নারীর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে অনেকবার হেনস্তা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিষয়টি স্ত্রী রোজিনা আক্তার জানতে পারলে এ নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এরই একপর্যায়ে রোজিনা আক্তারকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় স্বামী ছালাম।
পরে রোজিনার বাপের বাড়িতে গিয়ে এধরণের আর হবেনা মর্মে তার স্বামী লিখিত দিলে আবারও শ্বশুর বাড়িতে ফিরে আসে গৃহবধূ রোজিনা। এই সর্বশেষ গত ১৮ জুন স্বামীর মোবাইলে রোজিনা অন্য মহিলার সাথে অনৈতিক কর্মকান্ডের কিছু ভিডিও দেখতে পান। এব্যাপার নিয়ে ওইদিন দুজনের মধ্যে আবারও ঝগড়া হয় এবং এক পর্যায়ে রোজিনাকে মারধর করে আবারও ঘর থেকে বের করে দেয় স্বামী ছালাম। এ ঘটনার প্রক্ষিতে ১৮ জুন রাতেই চকরিয়া থানায় স্বামী মোঃ ছালামের বিরুদ্ধে একটি এজাহার দায়ের করেন স্ত্রী রোজিনা।
ভিকটিম গৃহবধূ রোজিনা আক্তারের বাবা খুটাখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা জামাল উদ্দিন বলেন, আমার বড় মেয়েকে বিয়ে দিই চকরিয়া পৌরসভার মন্ডলপাড়া গ্রামের মনির আহমদ এর ছেলে মোঃ ছালামের সাথে ২০১২ সালে। বিয়ের একবছর পর থেকেই মেয়ের জামাই বিভিন্ন অজুহাতে আমার কাছ থেকে যৌতুক দাবি করতো। তার কথা মতো টাকা না দিলে আমার মেয়েকে মারধর করতো এবং শ্বশুর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতো।
তিনি দাবি করেন, মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে অনেক বার টাকা দিয়েছি। এ নিয়ে অনেকবার সালিশ দরবারও হয়েছে। প্রত্যেকবারই ভবিষ্যতে আর করবেনা মর্মে মুছলেকা দিয়ে আমার মেয়েকে নিয়ে যেতো। বিষয় গুলো স্থানীয় কাউন্সিলর ও জনপ্রতিনিধিরা সবাই জানেন। সর্বশেষ গত ১৮ জুন আমার মেয়েকে আবারও মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে উল্টো আমি সহ আমার মেয়ের বিরুদ্ধে আদালতে হয়রানি মূলক মামলা দায়ের করেছে।
এব্যাপারে স্বামী মোঃ ছালাম সাংবাদিকদের বলেন, আমার সাথে পাশের বাড়ির একটি মেয়ের সম্পর্কের বিষয়টি সত্য নয়। তবে তার সঙ্গে মাঝেমধ্যে কথা বলতাম। এতটুকু নিয়ে আমার সংসারে ছোটখাটো অশান্তি হয়। কিন্তু এধরণের ঝগড়া করে রোজিনা বাপেরবড়ি চলে যাওয়ায় আমি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, চকরিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডে স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগে এজাহার পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।