একঝাঁক শিক্ষার্থীর হাত ধরেই নতুনের কেতন উড়ছে জিপিএ ৫ এ সেরাদের সেরার তালিকায় থাকা চট্টগ্রামের সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজে। ‘ঐ নতুনের কেতন ওরে কাল-বোশেখীর ঝড়। তোরা সব জয়ধ্বনী কর! তোরা সব জয়ধ্বনী কর!’ — কাজী নজরুলের বিখ্যাত লাইনগুলোর সঙ্গে সুর মিলিয়ে সবেমাত্র কলেজ জীবনে পদাপর্ণের জ্বয়ধ্বনি তুলছে ওরা। এই নতুনের কেতনের মধ্যেই সংঘর্ষে জড়িয়েছে কলেজ ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ নিজেদের মধ্যে এ সংঘর্ষে জড়ায়।
বুধবার দুপুরে কলেজের বিজ্ঞান ভবনের নিচে কথাকাটাকাটির জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। ভবনের ওপরে চলছিল একাদশের ভর্তি কার্যক্রম। খবর পেয়ে চকবাজার থানা পুলিশের একটি টিম গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা গেছে, একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হওয়া নবীনদের নিজেদের গ্রুপে ভর্তির আমন্ত্রণ জানায় মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের একাধিক গ্রুপ, উপগ্রুপ। এসময় কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কাজী নঈম ও যুগ্ম আহ্বায়ক কমল গ্রুপের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরক্ষণে তা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় রূপ নেয়। এতে দুয়েকজন হতাহত হয়েছে বলেও শোনা গেছে।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের মজুমদার বলেন, ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
এদিকে কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কাজী নঈম বলছেন, এটি ছাত্রলীগের বিষয় নয়, এটি ব্যক্তিগত সমস্যা।
কাজী নঈম ঘটনার বর্ননা দিতে গিয়ে বলেন, আজকে কলেজে নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের কাগজপত্র জমা নেওয়া হচ্ছিল। বাইরে থেকে অনেক লোকজন, স্টুডেন্ট গেস্ট আসছে। কেউ কাউকে চিনেনা, কেউ কারও সাথে কথা বলতে গেছে। এসময় না চেনাতে কথা কাটাকাটি হয়েছে। এখানে দ্বন্দ্বের কোনো বিষয় না।
ছাত্রলীগের এ ধরনের ঘটনার পর নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য ছাত্রলীগের কি বার্তা থাকবে এমন প্রশ্নের জবাবে কলেজ ছাত্রলীগের এই আহ্বায়ক বলেন, এক পরিবারে পাঁচ সন্তান থাকলে সবাই মিলেমিশে থাকতে পারেনা। এক ঘরে থাকলে ধাক্কাধাক্কি হয়, এটা স্বাভাবিক বিষয়।
২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি মহসিন কলেজে নতুন কমিটি ঘোষণা করে নগর ছাত্রলীগ। কাজী নঈমকে আহ্বায়ক করে মিজানুর রহমান, আনোয়ার পলাশ, জয়জিৎ চৌধুরী, মায়মুন উদ্দিন মামুন, রবিউল হোসেন কমল, রোরহান উদ্দিন ইমনকে যুগ্ম আহ্বায়ক পদে রাখা হয় এ কমিটিতে। ঘোষিত এই কমিটি নিয়ে বিতর্ক উঠে পরদিনই। কলেজ ছাত্রলীগের একাংশ অভিযোগ তুলেন, কমিটিতে বিবাহিত, অছাত্র ও শিবির ক্যাডারদের রাখা হয়েছে। এনিয়ে পরদিন রাস্তায়ও নামে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত গ্রুপটি।