শোকে ও ভালোবাসায় ফিলিস্তিনের পাশে বাংলাদেশ

IMG 20231021 233229
print news

ইসরাইলের বোমা হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের জন্য একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করেছে বাংলাদেশ। ফিলিস্তিনের পাশে থাকার জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান।

একাত্তরকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, পশ্চিমাদের লক্ষ্য ফিলিস্তিনের ৭০ লাখ মুসলমানকে উদ্বাস্তু বানানো।

ইসরাইলের বিরামহীন বর্বর হামলার ১৪ দিন পার হয়েছে। এরমধ্যেই মারা গেছে দেড় হাজারের বেশি শিশুসহ চার হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। একেরপর এক বিমান হামলায় রক্ষা পায়নি হাসপাতাল, রুটির দোকান এমনকি মসজিদও।

শুক্রবার এক হামলায় একই পরিবারের ২১ জন মারা যায়। যারা সকলেই বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের পরিবারের।

শুক্রবার এক হামলায় একই পরিবারের ২১ জন মারা যায়। যারা সকলেই বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের পরিবারের। পরিবারটির এই একমাত্র শিশু বেঁচে রয়েছে।
ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান বলেন, মধ্যরাতের হামলায় পুরো পরিবারটি ধ্বংস হয়ে যায়। তারা হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিলো। বাচ্চাটি বিকট শব্দে দূরে ছিটকে পড়ে। সকালে তাকে শস্য ক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়। সে এখন এতিম । কিন্তু ভবিষ্যত যোদ্ধা।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ফিলিস্তিনবাসীর পাশে আছে। তারা সাহায্য করতে চায় খাবার এবং অর্থ দিয়ে।

তিনি বলেন, আমরা ব্যাংক একাউন্টে টাকা নিচ্ছি। কিন্তু বিষয়টি এমন নয় যে এই টাকা আমরা সরাসরি ইসলাইলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্থদের দিতে পারবো। আগে আমরা খাবার নিয়েছি ওষুধ নিয়েছি। কিন্তু পাঠাতে পারিনি অনেকসময়ই। তাই এখন আর তা নিতে চাই না।

গত ৭ অক্টোবরে ইসরাইলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা হামলা চালায়। জবাবে অল্প সময়েল মধ্যেই পাল্টা হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। এর পর তারা অবরোধ করে গাজা উপত্যকা। গাজায় আরোপ করা অবরোধের মধ্যে শনিবারই প্রথম সাহায্য পৌঁছেছে।

এ পর্যন্ত গাজায় ইসরাইলের টানা বিমান হামলায় চার হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

গাজায় বিদ্যুতের পাশাপাশি খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল। জাতিসংঘ সেখানকার পরিস্থিতিকে বিপর্যয়কর আখ্যা দিয়েছে।

ইসরাইলের হামলার বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনকে সমর্থন দিয়ে বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ হচ্ছে। শুক্রবার ইন্দোনেশিয়া থেকে শুরু করে তিউনিসিয়া পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে মুসলিমরা ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভ হয়েছে যুক্তরাজ্যেও।

ওই হামলার পর বাংলাদেশ তীব্র নিন্দা ও উভয়পক্ষকে অস্ত্র বিরতির আহ্বান জানায়। ফিলিস্তিনের পক্ষে সবসময় পাশে থাকা বাংলাদেশ শনিবার শোক পালন করে।

গত বুধবার ওআইসিভুক্ত ১৪ টি দেশের রাষ্ট্রদূতদের সাথে গণভবনে জরুরি বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফিলিস্তিনে বাংলাদেশ থেকে ওষুধ ও জরুরি সামগ্রী পাঠানোর কথাও জানানো হয়।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর ফিলিস্তিনে নিহতদের আত্মার শান্তি ও আহতদের সুস্থতার জন্য বাংলাদেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। আর অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হয় বিশেষ প্রার্থনা।

শনিবার বাংলাদেশের সব সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত ছিলো। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেতের দূতাবাসও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।

এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রকে মানবিক হবার আহবান জানান বক্তারা

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন অনুষ্ঠানে বলেন, আজকে দখলদারিত্ব রাখার জন্য তারা মরিয়া। তার শিকার হয়েছে নিরীহ ফিলিস্তিনবাসী।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ইহুদি, মুসলিম বা খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর ব্যাপার না। ব্যাপারটা হলো সমস্ত এলাকার ওপর তারা আধিপত্য কায়েম রাখতে চায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *