উত্তরাঞ্চলে শীতে জবুথবু অবস্থা, কষ্টে নিম্ন আয়ের মানুষ

rajshahi 1 20240116181541
print news

মাঘের শুরুতেই উত্তরাঞ্চলে জেকে বসেছে শীত। ফলে জবুথবু অবস্থা বিরাজ করছে। তবে সবচেয়ে কষ্ট নিম্ন আয়ের মানুষের। তীব্র শীতে শ্রমজীবী অনেকের ভাগ্যে মিলছে না কাজ। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী দু-একদিনের মধ্যে রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলে হতে পারে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। কৃষি অধিদপ্তর বলছে, এমন আবহাওয়া আলুসহ বোরো চাষের জন্য অভিশাপ।

গত কয়েকদিন থেকেই ভোরের ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিম হওয়া। গেল কয়েক দিন ধরে উত্তরাঞ্চলের আবহাওয়া এমনই। মাঘের শুরুতেই জেকে বসেছে শীত। শীতের দাপটে জবুথবু অবস্থা সাধারণ মানুষের। সবচেয়ে বেশি কষ্ট শ্রমজীবী মানুষের। তীব্র শীত উপেক্ষা করে কাজের খোঁজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তবুও মিলছে না কাজ।

রাজাশাহী চারঘাট উপজেলার শুকুর আলী বলেন ভোর ৪টার দিকে রাজশাহী আসেন কাজের খোঁজে। তবে দীর্ঘ অপেক্ষার পরও মেলেনি কাজ।

বাসা থেকে ভোর ৪টায় বের হয়েছি, কাজ এখনো পাইনি। ঠান্ডার জন্য কেউ কাজে নিচ্ছে না। কাজ না করলে খাবো কী?

শুকুর আলীর পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন মজিদ আলী। তিনি বলেন, খুব ঠান্ডা পড়ছে। ৮-৯ দিন পর বাসা থেকে বের হয়েছি। চারদিকে অনেক কুয়াশা, কাজ-কাম নাই, বয়সও হয়ে গেছে, কেউ কাজে নিচ্ছেও না। আমরা চলবো কীভাবে?

অপর শ্রমিক মো. মিজান বলেন, খুব কষ্ট করে ভোর ৪টার দিকে আসি। ঠান্ডার জন্য কোনো গেরস্ত আসে না। কোনো কাজ হয় না। আমাদের খুব দুর্দিন।

আবহাওয়া অফিস বলছে, চলতি মাসে রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৬ ডিগ্রি। এছাড়া সপ্তাহজুড়ে বিভাগের আট জেলায় তাপমাত্রা ওঠানামা করছে ৯ থেকে ১২ ডিগ্রিতে। আগামী কয়েক দিন রাজশাহীর আবহাওয়া পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে, সে সঙ্গে হতে পারে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি।

আর কৃষি অধিদপ্তর বলছে, এমন আবহাওয়া অব্যাহত থাকলে কৃষির জন্য হবে অভিশাপ। প্রভাব পড়বে আলুসহ বোরোতে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ রহিদুল ইসলাম বলেন, ১৭ জানুয়ারি থেকে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। রৌদ্রোজ্জ্বল থাকলেও রাতের তাপমাত্রা একটু কমবে। তবে বৃষ্টির পরদিনের তাপমাত্রা একটু বাড়বে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মোজদার হোসেন বলেন, এমন আবহাওয়ায় বিশেষ করে আলুর ওপর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষকদের ব্যাপকভাবে সচেতন করছি। যারা বোরো ধান রোপণ করেছে তাদের একটু সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে যদি পানি নিয়মিত না দেওয়া যায় তাহলে চারা মারা যেতে পারে।

এদিকে প্রচণ্ড শীত থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষের চেষ্টার কমতি নেই। ছিন্নমূল মানুষ অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম অহমেদ বলেন, শীতার্তদের পাশে দাঁড়াতে সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। আমরাও সামর্থন অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *