কক্সবাজার সমুদ্র উপকূল জুড়ে ভেসে আসছে সামুদ্রিক মৃত মা কাছিম। শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) একদিনে ভেসে এসেছে ২৪টি মৃত মা কাছিম। গত দেড় মাসে সাগরের পানির তোড়ে ভেসে এসেছে ৮৩টি সামুদ্রিক মা কাছিম। মৃত এসব কাছিমের প্রত্যেকটির পেটে ডিম রয়েছে। ভেসে আসা মৃত মা কাছিমগুলোকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর সৈকতের বালিতে পুঁতে ফেলেছেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা।
উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বোরি) জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বেলা ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের হিমছড়ি থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ২৪টি মৃত কচ্ছপ পাওয়া গেছে। গত জানুয়ারি থেকে চলতি মাসের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮৩টি মৃত মা কাছিম ভেসে এসেছে উপকূলে। এসব কাছিমের প্রত্যেকটির পেটে রয়েছে ডিম।
একের পর এক মা কাছিমের মৃত্যু অনুসন্ধানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যে কাছিমগুলো মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে সেগুলোর বেশিরভাগের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া কিছু কিছু মৃত কাছিমের শরীরে জেলেদের জাল ও রশি প্যাঁচানো অবস্থায় পাওয়া গেছে।’
তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘ইতোমধ্যে বোরির একদল গবেষক মৃত মা কাছিমের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে প্রাথমিকভাবে একটি ফলাফল পেয়েছেন। তা হচ্ছে সামুদ্রিক মা কাছিমের এখন প্রজনন মৌসুম। সমুদ্রের বালিয়াড়িতে ডিম দিতে আসার পথে জেলেদের জালে আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে।’
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার সমন্বয়ে এ পর্যন্ত ৭৮টি কাছিম থেকে ৯ হাজার ১০৮টি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব মা কাছিম সমুদ্রপাড়ে ডিম দিয়ে সুস্থ ও জীবিত অবস্থায় সাগরে ফিরতে সক্ষম হয়েছে। তাই সমুদ্রে মাছ ধরার নৌযান ও জেলেদের গতিবিধিসহ নানাভাবে সচেতনতার কোনও বিকল্প নেই বলে মনে করেন সমুদ্রবিজ্ঞানিরা।