বিশেষ প্রতিবেদক, সিবিটুয়েন্টিফোর নিউজ
কক্সবাজার শহরের ভেতরেই একটি ‘টর্চার সেলে’ সন্ধা¬ন পেয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১৫)। ওই টর্চার সেলে পর্যটকদের ধরে এনে নির্যাতন করে মুক্তিপণ আদায় করা হতো। এই টর্চার সেলে জড়িত ছিনতাই, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়কারি চক্রের চার সদস্যকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া চারজনই হিন্দু যুবক।
কক্সবাজার শহরের বৈদ্যঘোনা এলাকায় পুরাতন জাদিরাম বৌদ্ধ মন্দিরের পাহাড়ে একটি পরিত্যক্ত ঘরে ওই ‘টর্চার সেলে’র সন্ধান মিলেছে।
ওই টর্চার সেলে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া চারজন হলো কক্সবাজার পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের ঘোনার পাড়ার এস এ ক্যাং এলাকার বান্টু দাশের ছেলে উজ্জল দাশ (২৮), একই এলাকার তপোবন সড়কের উৎপল দে (২৯), একই এলাকার মৃত দুলাল ধরের ছেলে বিধান ধর (৩০) ও ৯নং ওয়ার্ডের ঘোনার পাড়ার মহেশখাইল্লা পাড়ার কাজল রুদ্রের ছেলে অন্তর রুদ্র (২২)।
কক্সবাজারে দায়িত্বরত র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারি পরিচালক ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, র্যাবের একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, কক্সবাজার পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের বৈদ্যঘোনা এসএ ক্যাং জাদিরাম পাহাড়ের উপর একটি ডাকাত দল ডাকাতি করার জন্য সমবেত হয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাত সোয়া ১১টার দিকে ওই এলাকায় বিশেষ অভিযান চালানো হয়। অভিযানকালে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ দিক-বিদিক দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। ওই সময় চারজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাব।
তিনি জানান, গ্রেফতার হওয়া ডাকাত দলের কাছ থেকে একটি কিরিচ, ৩টি ছুরি, ২টি প্লাষ্টিকের পাইপের লাঠি, ১টি কালো রশি ও ৩টি স্মার্টফোন উদ্ধার করা হয়।
র্যাব কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, সা¤প্রতিক সময়ে কক্সবাজার কক্সবাজার পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডস্থ বৈদ্যঘোনা জাদিরাম পাহাড়ের উপর পরিত্যক্ত ঘরকে ‘টর্চার সেল’ বানিয়ে একটি ডাকাত চক্র বিভিন্ন পর্যটক ও নিরীহ মানুষদের ধরে এনে বেধড়ক মারধরের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায় ও মাদক সেবনের অভয়ারণ্য গড়ে তুলেছে, এমন সংবাদ জানতে পারে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন। তারপর থেকে গোয়েন্দা দল তদন্ত করতে শুরু করে।
র্যাব জানিয়েছে, ধৃত চারজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে- কক্সবাজার শহরের নিরীহ মানুষকে টার্গেট করে সুযোগ বুঝে তাদের কাছ থেকে মোবাইল, টাকা এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনতাই করতো। এছাড়াও ভিকটিমদের বিভিন্ন সময় বৈদ্যঘোনা জাদিরাম পাহাড়ের উপর পরিত্যক্ত ঘরে টর্চার সেলে আটকে রেখে নির্যাতনের মাধ্যমে পরিবারের কাছ থেকে বিশাল অংকের মুক্তিপণ আদায় করতো।
র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারি পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) মো. কামরুজ্জামান জানান, উদ্ধার করা আলামতসহ গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কক্সবাজার সদর মডেল থানায় লিখিত এজাহার দেয়া হয়েছে।